অনলাইন ডেস্ক: ভিন্ন এক পরিবেশে এবারের রমজান মাসে রোজা পালন করছেন মুসলমানরা। করোনা ভাইরাসের কারণে অধিকাংশ দেশে জারি হওয়া লকডাউনের কারণে থমকে গেছে অর্থনীতির চাকা, বন্ধ রয়েছে মসজিদে নামাজ আদায়। সরকারের পক্ষ থেকে মুসলমানদেরকে বলা হচ্ছে, যথাসম্ভব ঘরে থাকার জন্য। পাশপাশি করোনা প্রতিরোধে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামার্শও দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আর রমজানের রোজা রাখার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে কর্মরত চিকিৎসক ডা. আমির খান।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার একটি উপ সম্পাদকীয়তে ডা. আমির খান জানায়, রোজা রাখার কারণে পুষ্টি কমে গেলে শরীর শক্তি সংরক্ষণ করে রাখে। আর এই শক্তি সংরক্ষণ করতে গিয়ে শরীর ক্ষতিগ্রস্ত সব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে। এ পুনরুজ্জীবিত হওয়া কোষগুলোই রোজা শেষ হওয়ার পর শরীরে তৈরি হওয়া নতুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী কোষের উন্নয়নে সহায়তা করে। আর এগুলোই খুব দ্রুত আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
রোজায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো পানি না খেয়ে থাকা। গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পানি না খেয়ে থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এতে বিভিন্ন রোগে সহজেই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে গবেষকরা এও বলছেন যে, উপোস থাকার পর পানি এবং খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের চেয়েও আরো বেশি কার্যকর হয় ।
অন্যান্য সব উপোসের চেয়ে রমজানের উপোস একটু ভিন্ন বলে মনে করেন ডা. আমির খান। রমজানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সুফল পেতে এ সময় ভাজা–পোড়া খাবার পরিধান করার আহ্বান জানিয়েছেন ডা. আমির খান।। তিনি বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যা তৈরি হয় সেটি পুরোটাই বৃথা যেতে পারে ভাজা–পোড়া খাবারের কারণে।
বিশ্বের সবজায়গায় এক সময় ধরে রোজা পালন হয়না। কিছু দেশে দীর্ঘ সময় ,আবার কিছু দেশের কম সময়ের জন্য রোজা পালন করতে হয়। তবে এটি নিশ্চিত যে আপনি যদি ১২ ঘণ্টা খাবার এবং পানি ছাড়া থাকেন তাহলে এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবেই।
আর এ জন্য প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ উপোস থাকছেন। মিশরীয় সভ্যতাতেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উপোস থাকতেন সেই সময়ের মানুষ। এছাড়া শুধু ইসলাম ধর্ম নয়; হিন্দু, খ্রিস্টান, ইহুদিসহ প্রায় সকল ধর্মেই উপোস থাকার কথা বলা হয়েছে।