প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে রেলে যাত্রী পরিবহনে ১৪টি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ৮ জন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা চীন ও অন্যান্য দেশের সংশ্লিষ্ট কারিগরি নির্দেশনাগুলো অধ্যায়ন ও পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের জন্য এই কারিগরি নির্দেশনা তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রেলে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ১৪ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-
১. রেল স্টেশনগুলোতে সুরক্ষা সরঞ্জাম যেমন- মাস্ক, জীবাণুমুক্ত ইত্যাদি সংরক্ষণ, জরুরি পরিকল্পনা প্রয়োজন, জরুরি বর্জ্য ব্যবস্থা ক্ষেত্র স্থাপন, প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণকে জোরদার করা।
২. কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা এবং যারা অসুস্থতা অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
৩. তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জামগুলো রেল স্টেশনের প্রবেশপথে স্থাপন করা বা তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখা এবং স্টেশনে আশা সবার তাপমাত্র পরীক্ষা করা। যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকবে তাদের ওই জরুরি এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।
৪. বায়ু চলাচল বাড়ানো। সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এয়ার কন্ডিশনার স্বাভাবিক মাত্রায় চালাতে হবে। বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা। সকল এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাসকে বন্ধ রাখা।
৫. দরজার হাতল, চেকআউট কাউন্টার, লিফট এবং পাবলিক টয়লেট পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা। টয়লেটগুলোতে তরল সাবান অথবা সাবান থাকতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হাত জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে।
৬. যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থান, ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৭. ট্রেন জীবাণুমক্ত করতে হবে এবং সিটকভারগুলো প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৮. প্রতিটি ট্রেনে হাতে ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে, যেখানে সন্দেহজনক উপসর্গগুলো আছে এমন যাত্রীদের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে।
৯. যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট কেনার জন্য পরামর্শ দিতে হবে। সারিবদ্ধভাবে ট্রেনে ওঠার সময় এবং নামার সময় যাত্রীদের পরস্পর থেকে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।
১০. যাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। মাস্ক পরতে হবে এবং হাতের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে।
১১. সবাইকে হাঁচি দেয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢাকতে হবে।
১২. পোস্টার, ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যজ্ঞান পরিবেশন জোরদার করতে হবে।
১৩. মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা ট্রেনে টিকিটের মাধ্যমে যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে।