জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে দলের এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি । বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
যদিও গতকাল বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমে খবর বের হয়, ‘বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে স্কাইপি বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।’
তবে আজ এ বিষয়ে সাংবাদিকরা দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বক্তব্য জানতে চাইলে রিজভী বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। হলে তা জানানো হবে।
কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল দেশের ইউনিয়নের হাটবাজারে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় দলের কেন্দ্রঘোষিত মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, মিডনাইট সরকারের জুলুমে দেশের মানুষ চরম অশান্তিতে আছে। কৃষক শ্রমিক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী দিনমজুর, প্রবাসী, কায়িক শ্রমজীবী কেউ ভালো নেই। চারদিকে ত্রাহি দশা। জালিমশাহীর বড় বড় আসরে জনগণ জর্জরিত। পবিত্র রমজানেও ভালো নেই দেশের মানুষ। চারদিকে হাহাকার চলছে। ১৭ কোটি মানুষের আর্তনাদ, কোথাও শান্তি নেই।
তিনি বলেন, ঘরে ধান উঠাচ্ছেন না কৃষক। মাঠেই জ্বালিয়ে দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছেন। কী মর্মান্তিক দৃশ্য। আর সরকারের খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, এটা সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। কৃষিমন্ত্রী বলছেন, ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলেও এ মুহূর্তে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই।
মন্ত্রীদের এসব বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, হীরকরাজার মতো কৃষকরাও মন্ত্রীর চোখে ষড়যন্ত্রকারী। ন্যায্যমূল্য দেয়ার কোনো পরিকল্পনাই এই অবৈধ সরকারের নীতিতে নেই। মন্ত্রীদের এ ধরনের কথাবার্তা বাংলাদেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ধান কিনে ভর্তুকি দেয়ার যে হিসাব সরকার করছে তা কৃষকের জন্য নয়। ধান কেনার ভর্তুকির টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে মিলমালিকদের জন্য। মিলমালিকরা ফরিয়াদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে কমমূল্যে ধান কিনে সরকারের কাছে তা চড়া দামে বিক্রি করছে। মিলমালিক ও ফড়িয়ারা সরকারি দলের লোক। সুতরাং কৃষকের ভর্তুকির নামে যে রাষ্ট্রীয় টাকা খরচ হচ্ছে তা মূলত পাচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকজন।
অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, যে কোনো বিচার হবে উন্মুক্তভাবে। কারাগারের একটি কক্ষে বিচার হতে পারে না। কেরানীগঞ্জ উপজেলায় কারাগারের মধ্যে আদালত নিয়ে যাওয়া সংবিধানবিরোধী। পাশাপাশি ফৌজদারি কার্যবিধিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, কোথায় কোথায় আদালত স্থানান্তরিত হতে পারে। তাতে উল্লেখ নেই- কারাগারে কোর্ট স্থাপিত হতে পারে। সেজন্য সরকারকে বলব, দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। বেগম খালেদা জিয়াকে এ মুহূর্তে মুক্তি দিন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি শামসুজ্জোহা তোফা, বিএনপির দফতরের কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।