অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে পণ্য রপ্তানি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সমাপ্ত আগস্টে রপ্তানি বেশি হয়েছে ৪.৩২ শতাংশ। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রপ্তানি বেড়েছে গড়ে ২.১৭ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রপ্তানি বেশি হয়েছে ১ শতাংশ।
করোনার হানায় গত মার্চ থেকে ব্যাপক হারে রপ্তানি কমতে থাকে। বছরের বাকি তিন মাসেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। এ কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রেকর্ড ১৭ শতাংশ কম হয়েছে পণ্য রপ্তানি। সেই ধারা থেকে বেরিয়ে নতুন অর্থবছরেই ঘুরে দাঁড়ায় রপ্তানি খাত। প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১ শতাংশ বেশি। আগস্টেও বাড়ল।
রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, আগামী কয়েক মাসও খারাপ যাবে না। তবে প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রে আগামী মৌসুমকে কেন্দ্র করে বিগত বছরের এ সময় যে পরিমাণ রপ্তানি আদেশ পেতেন সে তুলনায় এবার খুব বেশি রপ্তানি আদেশ আসছে না।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসে মোট ৬৮৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৮১ কোটি ডলার। অন্যদিকে একক মাস হিসেবে সমাপ্ত আগস্টে রপ্তানি হয়েছে ২৯৭ কোটি ডলারের পণ্য। গত বছরের আগস্টে ছিল ২৮৪ কোটি ডলার। তবে তৈরি পোশাকের রপ্তানি খুব একটা বাড়েনি। বরং গত অর্থবছরের এই সময়ের তুলনায় আলোচ্য দুই মাসে ০.০৬ শতাংশ কম হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা থেকে রপ্তানি বেশি হয়েছে প্রায় ২ শতাংশ। অবশ্য করোনা সংক্রমণের কারণে যে হারে কমেছে তার তুলনায় এই বৃদ্ধি অনেক বেশি। মোট ৫৭১ কোটি ডলার এসেছে পোশাক রপ্তানি থেকে।
এ ব্যাপারে বিজিএমইএ সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। সব শোরুম খুলে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে রপ্তানি চাহিদা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া করোনাকালে বাতিল বা স্থগিত হওয়া পণ্যও অনেক ক্রেতা ফেরত নিচ্ছেন। ফলে রপ্তানি বাড়ছে। তবে আগামী মৌসুমকে কেন্দ্র করে যে পরিমাণ রপ্তানি আদেশ এই আগস্ট-সেপ্টেম্বরে থাকার কথা সেটা কিন্তু নেই। জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে রপ্তানি কম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে ও পরে প্রায় ১০ দিনের ছুটির কারণে আগস্টে কিছু কম রপ্তানি হয়েছে। সব ঈদের পরের রপ্তানি চিত্রই এ রকম হয়ে থাকে।’
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানি তালিকার অন্যান্য বড় পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি, ৫০ শতাংশ। ২০ কোটি ডলারের পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি হয়েছে গত দুই মাসে। কৃষিপণ্যের রপ্তানি বেশি হয়েছে ৩৩ শতাংশ। ১৮ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে এই সময়ে। ওষুধের রপ্তানি বেড়েছে ১৯ শতাংশ। প্রায় তিন কোটি ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে। হিমায়িত মাছের রপ্তানি বেশি হয়েছে ৬১ শতাংশ। প্রায় দুই কোটি ডলারের হিমায়িত মাছ রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানি তালিকার ছোট-বড় অন্যান্য পণ্যের রপ্তানিতেও ওঠানামা লক্ষ করা গেছে।