আন্তর্জাতিক ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: এক সময় এটি ছিল অনেকের জন্য অনেক দূরের স্বপ্ন। কিন্তু সামনের বছরেই এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলছে, তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পর্যটক পাঠাবে। সেখানে থাকা এবং যাওয়া-আসা, সব মিলিয়ে খরচ পড়বে পাঁচ কোটি ৮০ লাখ ডলার!
তবে নাসা জানিয়েছে, খুব অল্প সংখ্যক পর্যটকই প্রতি বছর সেখানে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
নাসা ঘোষণা করেছে, ২০২০ সাল হতে পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা মহাকাশে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রাত কাটাতে পারবেন। প্রতি রাতের ভাড়া দিতে হবে ৩৫ হাজার ডলার। তবে আসল খরচ মহাকাশ স্টেশনের ভাড়া নয়। সেখানে পৌঁছানোর খরচটাই হচ্ছে আসল।
নাসার চীফ ফিনান্সিয়াল অফিসার জেফ ডেউইট বলেন, এই মূহুর্তে নাসার কোন নভোচারী যখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যান, তাদের পেছন খরচ পড়ে আট কোটি ডলার। এখন যদি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নাসা সেখানে পর্যটক পাঠাতে শুরু করে, তখন গড়ে খরচ পড়বে জনপ্রতি পাঁচ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর পর সেখানে নানা ধরনের তৎপরতায় অংশ নিতে পারবেন পর্যটকরা। সেখানে তাদের জিরো গ্রাভিটি অর্থাৎ ওজনহীনতার অভিজ্ঞতা হবে। সেখান থেকে মহাকাশ এবং পৃথিবীর চমৎকার দৃশ্য দেখতে পাবেন এবং ব্যাডমিন্টনও হয়তো খেলতে পারবেন।
নাসা জানিয়েছে, যারা পর্যটক হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাবেন, তারা সেখানে ৩০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারবেন।
নাসা দুটি বেসরকারি কোম্পানিকে ভাড়া করেছে পর্যটকদের মহাকাশ স্টেশনে আনা নেয়ার জন্য। এর একটি অ্যালোন মাস্কের স্পেস এক্স। এরা তাদের ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করবে পর্যটকদের পরিবহনের কাজে। আরেকটি হচ্ছে বোয়িং। স্টারলাইনার নামে একটি মহাকাশযান তৈরি করছে বোয়িং এই কাজে।
ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশ স্টেশনে কোন পর্যটককে পৌঁছে দেয়া এবং ফিরিয়ে আনা বাবদ ছয় কোটি ডলার ভাড়া দিতে হবে এই দুটি কোম্পানিকে।
তবে পর্যটক হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার আগে খুবই কঠোর শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে সবাইকে। নাসা আশা করছে, পর্যটকদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ তারা মহাকাশে আরও গবেষণা এবং নতুন অভিযানে খরচ করতে পারবেন।
নাসার কর্মকর্তা বিল গেরস্টেন মেইনার বলেন, নিচু কক্ষপথের বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে নাসা ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথম নারী নভোচারী পাঠানো এবং নতুন করে চাঁদে অভিযান শুরু করার তহবিল যোগাতে পারবে। এরপর মঙ্গলগ্রহেও অভিযানের প্রস্তুতি নিতে পারবে।
৫০ বছর আগে প্রথম চাঁদে পা রেখেছিলেন নীল আর্মস্ট্রং। অর্ধশতক পর নাসা এখন মহাকাশের বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে আরেকটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যার ফলে কোটিপতিদের জন্য এখন খুলে যেতে পারে মহাকাশের দুয়ার। বিবিসি বাংলা।