জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : পলাতক বঙ্গবন্ধুর চার খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার রাজধানীর ধোলাইপাড়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার আয়োজনে অসহায়দের মাঝে খাদ্য বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুজন খুনি এখন কোথায় আছেন তা আমরা চিহ্নিত করতে পারিনি। বাকি দুজন খুনির অবস্থান চিহ্নিত করা গেছে। কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার মধ্যদিয়ে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, জাতির জনককে হত্যা করে খুনিরা ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে সমাহিত করতে সাহস পায়নি। সমাহিত করা হলো টুঙ্গীপাড়ায়। তখন সে জায়গাটি ছিলো অবহেলিত। আজ সেই টুঙ্গীপাড়া প্রেরণার উৎস। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭০-এর নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অগ্রণী ভূমিকায় স্বাধীনতা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা বাঙালি জাতি এক হয়ে যায়। ৭০ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পরও যখন পাকিস্তানিরা ক্ষমতা দিলো না তখনও ফুসে ওঠে পুরো বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেই সবকিছু পরিস্কার করে দিয়েছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে কি করতে হবে তারও দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুঃখ করে বলেন, শিশু সন্তান রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বংশ নির্বংশ করতে চেয়েছিলো খুনিরা কিন্তু পারে নাই। তার সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী আজ বিশ্বে রোল মডেল। মনে করেছিলো বঙ্গবন্ধুকে শেষ করলেই দেশ পাকিস্তানের দাসত্বে পরিণত হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা দেশে ফেরার কারণে সব বুমেরাং হয়ে গেছে। বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে স্ব গর্ভে দাঁড়িয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেতৃত্বের কারণে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনিরা মনে করেছিলো এদেশ আবার পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হবে। কিন্তু জাতির জনকের কন্যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে দেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, যে মানুষ সারাজীবন জনমানুষের জন্য কাজ করে গেছেন, পরাধীন জাতি থেকে মুক্তি এনে দিলেন তাকেই হত্যা করা হলো। ২১টি বছর পার হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেননি। বরং খুনিদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এর চেয়ে লজ্জা আর কি হতে পারে।
ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে জাপা যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিসি ইফতেখার আহমেদ, জাপার ভাইস চেয়ারম্যান সালমা হোসেন, এডিসি রোমানা কাজী নাসরিন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আজহার হোসেন, শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, কদমতলী থানার সভাপতি নাসিম মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন, হাজী নুর হোসেন, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী হাবিবুর রহমান হাবু, ৫২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী মো. মাসুদ, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম লাইজু, ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক, মহিলা কাউন্সিলর নাজমা খোকন, শাহিদা বেগম, সাথী আকতার, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, তাইজুল ইসলাম তাজু, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, আব্দুল গাফফার দেওয়ান গাজী, ব্যারিস্টার সামিউর রহমান অভি, শেখ মাসুক রহমান, ইব্রাহিম মোল্লা, কাউসার আহমেদ প্রমুখ।
এছাড়াও শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।