দারুণ এক জুটি গড়ে বিপদে দলের হাল ধরেছেন। ধৈর্য্যর পরীক্ষা দিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সমালোচিত লিটন দাস। দারুণ ফুটওয়ার্ক, টাইমিং আর টেম্পারমেন্টের ছাপ রেখে পাওয়া সেঞ্চুরিটা বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে বড় স্কোরের স্বপ্ন।
দুঃসময়ের ঘেরাটোপে ছিলেন লিটন দাস। ব্যাট থেকে হারিয়ে গিয়েছিল রান। দলও সমানে হারছিল। বাজে সময়ের ষোলোকলা পূর্ণ হয় টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পরে। অনেকেই জাতীয় দলে তার শেষটাও দেখে ফেলেছিলেন। কিন্তু টেস্ট আর টি-২০ লিটন যে একেবারেই ভিন্ন। টি-টোয়েন্টিতে ধুকলেও, এ বছর টেস্টে রানের মধ্যেই ছিলেন লিটন। চট্টগ্রামে মাঠে নামার আগে এ বছর ৫ টেস্টে ৪ ফিফটিতে করেছিলেন ৩৭০ রান।
চট্টগ্রামে যখন মাঠে নামলেন, দল অসীম চাপে। ৪৯ রান তুললেই ফিরে গেছেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। আরো একটা বিপর্যয় চোখ রাঙানি দিচ্ছিল। তবে সেখান থেকে দলকে পথা দেখান লিটন-মুশফিক। টেস্ট মানেই দিতে হবে ধৈর্য্যের পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় ভালো মতই উৎরে গেছেন এই দুই জন।
শর্ট বলে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্বলতা কারো অজানা নয়। শাহীন শাহ আফ্রিদিও সেই অস্ত্র বেছে নেন মুশফিককে ফেরাতে। একের পর এক গোলা ছুড়েছেন এই পেসার। তবে মুশফিক দারুণ দক্ষতায় প্রতিটি বলই ছেড়ে দিয়েছেন।
৯৯ বলে লিটন পূর্ণ করেন ফিফটি। ব্যক্তিগত ৬৭ রানে একবার জীবনও পান। এরপর আর ভুল করেননি। যদিও সেঞ্চুরির আগে বেশ অস্বস্তিতে ছিলেন লিটন। তাকে সাহায্য করতে বেশ ক’বার মাঠে ছুটে আসতে হয় ফিজিওকে। সাহায্য নিয়েছেন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়েরও। তবে কোনো কিছুই টলাতে পারেনি এই ব্যাটাররা।
কৃতিত্ব দিতে হবে মুশফিককেও। ১৯০ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে তিনিও বাজে সময়ে পেছনে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ব্যক্তিগত অর্জনের পাশাপাশি দলীয় রেকর্ডও সমৃদ্ধ হয়েছে লিটন মুশফিকের ব্যাটে। দেশের মাটিতে ৫ম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ডটা নতুন করে গড়েছেন এই দু’জন।
এদিকে, দ্বিতীয় দিনে শনিবার (২৭ নভেম্বর) আরও অনেক রেকর্ড ডাকছে মুশফিক-লিটন জুটিকে। টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চাশ রানের কমে চার উইকেট হারানোর পর দুই শর বেশি রানের জুটি হয়েছে এর আগে পাঁচবার। মুশি-লিটন তাদের ২০৪ রানের জুটিতে আর মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারলেই সেটি হয়ে যাবে পঞ্চাশের কম রানে ৪ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি।
এছাড়া লঙ্কান দুই ব্যাটার দিলশান-সামারাবিরার পঞ্চম উইকেটে ২৮০ রানের সর্বোচ্চ জুটি ছাড়িয়ে যেতে মুশি-লিটনের প্রয়োজন ৭৭ রান। এদিকে, মুশফিক-লিটন আরও ৭৭ রান করতে পারলে পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপটাও হয়ে যাবে।