বিদ্যুৎচালিত ঢেঁকি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন গাইবান্ধার বিজ্ঞানী শফিকুল ইসলাম শফিক। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ স্বয়ংক্রিয় ঢেঁকিছাঁটা লাল চাল এলাকার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের সব জেলায়। বর্তমানে তার চালের মাসিক চাহিদা ২ টন।
গাইবান্ধা সদরের খামার বোয়ালী গ্রামের বাসিন্দা মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক। তার বাবা একজন কাপড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের পরিবাদের সদস্য সংখ্যা সাতজন। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে শফিকুল চতুর্থ।
শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, যখন ঢেঁকি তৈরির কাজ শুরু করি, তখন এলাকার লোকজন পরিবারের লোকজন ও আত্মীয় স্বজনরা সবাই পাগল বলতে শুরু করেন। তারা বলতেন, অল্প বয়সে ছেলেটা মনে হয় পাগল হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু হাল ছাড়িনি। অবশেষে বিদ্যুৎচালিত ঢেঁকি তৈরি করতে সফল হয়েছি।
এলাকাবাসি ও স্বজনরা জানান, প্রথম অবস্থায় শফিককে আমরা পাগল ভাবতাম, আর বলতাম যে শফিক লেখাপড়া শিখে ভালো চাকরি না করে শেষ পর্যন্ত কি করতে চাইছে। মনে হয় সে পাগল হয়ে গেছে। তবে তার সাফল্য দেখে আমরা খুবই আনন্দিত। শফিক আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে, মানুষ চেষ্টা করলে সব পারে। আমারা এখন তাকে নিয়ে গর্ব করি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা বিসিক কর্মকর্তা রবিন চন্দ্র রায় বলেন, আমি শফিকের ঢেঁকির বিষয়টা শুনেছি। নিজেও তা পরিদর্শন করবো এবং কোনো বিষয়ে সহযোগিতা লাগলে তা করবো।
শফিক মূলত গানজিয়া ধান দিয়ে ঢেঁকিছাটা চাল রফতানি করেন। এই চাল কিছু দিন বাজারে বিক্রির পর চাহিদা বেড়ে যায়। দাম বেশি হলেও মানুষ ঢেঁকিছাঁটা চাল কিনতে আগ্রহী।
শফিক ২০০৬ সালে গাইবান্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি ২০১০ বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা করেন এবং ২০১৪ অতিশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে তিনি বিএসসি পাস করেন।
২০১৬ সালে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর তিনি ঢাকায় একটি বিদেশি কোম্পানিতে যোগদেন। এরপর চাকরি ছেড়ে নিজেই উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী হন আর চেষ্টা শুরু করেন বিদ্যুৎচালিত ঢেঁকি তৈরির। তিনি এখন সফল।