মুফতি হান্নান, জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা। জড়িত ছিলেন ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর ভয়াবহ সেই হামলার চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন জঙ্গি হান্নান। বেরিয়ে আসে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার পেছনে থাকা মাস্টারমাইন্ডের নাম, উন্মোচিত হয় অপরাধীদের মুখোশ।
হামলার আগে ১৪ থেকে ১৮ আগস্ট হাওয়া ভবন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসায় জঙ্গিদের সঙ্গে ৫টি গোপন বৈঠক হয়। যেখানে তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিরক্তি প্রকাশ করে দলের শীর্ষ নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে পথ থেকে সরানো জরুরি বলে জানান তারেক রহমান।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি মেজর অবসরপ্রাপ্ত নূর, বঙ্গবন্ধু কন্যার বাড়িতে, আসা-যাওয়ার পথে ও সমাবেশস্থলে আক্রমণের পরিকল্পনার ছক করেন। আর তাতে সায় জানিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ দেয়ার কথা বলেন জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।
হামলার জন্য গ্রেনেড সবচেয়ে ভালো হবে জানিয়ে নিজেই সরবরাহের কথা জানান লুৎফুজ্জামান বাবর।
বৈঠকের শেষ দিকে চূড়ান্ত হয় দিনক্ষণ। বেছে নেয়া হয় ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশকে। পর দিন রাতে কালো রঙের পাজেরো গাড়িতে চড়ে পিন্টুর বাসায় উপস্থিত জঙ্গিদের হাতে ১২টি গ্রেনেড তুলে দেন বাবর।
হামলাকারীদের নিরাপত্তা দিতে ও কিলিং মিশন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ ও গোয়েন্দারা সহযোগিতা করবে বলেও জঙ্গিদের আশ্বস্ত করা হয়।
মুফতি হান্নানের দেয়া জবানবন্দির সঙ্গে বাস্তবিক অর্থেই পুরো মিল ছিল হামলার ঘটনায়। হামলার পর আহতদের ওপর উল্টো লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। বহাল তবিয়তে ঘটনাস্থল ছাড়ে খুনিরা।