ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সাদারের রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণার জেরে রাজধানী বাগদাদে সহিংস বিক্ষোভ করেছেন তার সমর্থকরা। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। সমর্থকদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগ বন্ধের দাবিতে অনশনে রয়েছেন শিয়া নেতা আল সাদার। খবর আল জাজিরার।
মুক্তাদা আল সাদার সোমবার (২৯ আগস্ট) রাজনীতি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলে তার হাজার হাজার সমর্থক রাজধানী বাগদাদের রাস্তায় নেমে আসেন ।
বিক্ষোভকারীরা শহরের গ্রিন জোনখ্যাত এলাকায় প্রবেশ করে বিভিন্ন সরকারি দফতর ও ভবনগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আল সাদারের সমর্থকরা অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ও গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে ঘটনাস্থলেই হতাহত হন বেশ কয়েকজন।
যদিও সংঘর্ষের মধ্যেই বিভিন্ন সরকারি দফতর ও ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিভিন্ন সরকারি ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে সুইমিংপুলে সাঁতারে মেতে উঠতেও দেখা যায় অনেককে।
নিজের সমর্থকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে অনশন শুরু করেছেন শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সাদার। বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগ বন্ধ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
সোমবার এক টুইটবার্তায় দেশের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার জেরে রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন আল সাদার। এতে রাজনৈতিক সংস্কারের আহ্বানে সাড়া দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির শিয়া নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
গত অক্টোবরে দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কেন্দ্র করে নিজ দলের আইনপ্রণেতা ও ইরানপন্থী শিয়া নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ দেখা দিলে, থেমে যায় দেশটির সরকার গঠন প্রক্রিয়া। পরে সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়ে গত জুনে নিজ দলের আইনপ্রণেতাদের পতদ্যাগের নির্দেশ দেন আল সাদার। তবে গত মাসের শেষের দিকে সাদারের সমর্থকরা ইরাকি পার্লামেন্ট দখল করে সরকারি ভবনগুলোর বাইরে বিক্ষোভ শুরু করলে, পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণা করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, সোমবার রাজনীতি থেকে চূড়ান্ত অবসরের ঘোষণা দেন প্রভাবশালী এই শিয়া নেতা।