অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান হিসেবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন ঋষি সুনাক। কেলেঙ্কারি ও ব্যর্থতা নিয়ে তার দুই পূর্বসূরি পদত্যাগ করলে তিনি তাদের স্থলাভিষিক্ত হন। তার বিজয়ে পূর্ব আফ্রিকা ও এশীয়দের মধ্যে নতুন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি অভিবাসীরাও নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় তাদের জীবনমানে উন্নতি হবে বলেও বাড়তি প্রত্যাশা রয়েছে।
কিন্তু দলের ভিতরেই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। এক্ষেত্রে তাকে যেমন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও সেবাখাতে সফলতা দেখাতে হবে, আবার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও কঠোরভাবে সামলাতে হবে।
পথ ছাড়ছেন না বরিস জনসন
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার নিয়ত নিয়েই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন বরিস জনসন। ভেবেছিলেন—অন্তত আট বছর তো থাকছেনই প্রধানমন্ত্রীর পদে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৮০টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের উচ্চতায় নিয়ে যান তিনি। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর সেজফিল্ড শহরে চলে যান তিনি। সেখানেই বিজয় ভাষণ দেন। সেজফিল্ড ছিল টনি ব্লেয়ারের আসন। লেবার পার্টির এই কট্টর আসনটিতে কনজারভেটিভ দলের বিজয়ে তাকে দম্ভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে।
তখন তার বক্তব্য থেকে একটি পরিষ্কার বার্তা এসেছিল যে, তিনি এমন একজন নেতা, যিনি কেবল প্রভাবশালীই না, টনি ব্লেয়ারের মতোই দীর্ঘদিন মসনদে থাকছেন। তার সমর্থকরাও তেমনটি মনে করতেন।
পরের সময়টা যেন একটু দ্রুতই চলে গেছে। একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। বরিস জনসন এখন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ব্যাকবেঞ্চারদের একজন। এরপর স্বল্প-সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন লিজ ট্রাস। দেশের অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে না-পারার ব্যর্থতা থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। এই সুযোগে নিজেকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন বরিস জনসন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। ফলে তার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাক বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
বিভিন্ন জনমত জরিপ বলছে, আগামী নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়ের মুখে পড়তে পারে রক্ষণশীল দলটি। এমনকি উক্সব্রিজ ও সাউথ রুইসলিপে বরিস জনসনের নিজের আসনেও হেরে যেতে পারে কনজারভেটিভ পার্টি। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর বলছে, অন্য প্রধানমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে এমন প্রশ্ন তোলা হাস্যকর হতে পারে, কিন্তু বরিস জনসনের কথা উঠলে তা অভাবনীয় কিছু না। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনে নিজের আসন তিনি খোয়াতে পারেন।
কিন্তু মজার বিষয় হলো, ২০২৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনেও প্রার্থী হবেন বরিস জনসন। যারা বর্তমান নেতা ঋষি সুনাককে সমর্থন দিয়ে আসছেন, তাদের কেউ কেউ মনে করতে পারেন যে বরিস জনসন বুঝি বক্তৃতা দিয়ে বিপুল অর্থ আয়ের পথে হাঁটতে যাচ্ছেন। নেতৃত্ব ছাড়ার পর সাবেকদের অনেকেই এই লোভনীয় কাজটি করে যাচ্ছেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের রেকর্ড বলছে, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়ার পর কেবল বক্তৃতা দিয়েই এখন পর্যন্ত ১০ লাখ পাউন্ড আয় করেছেন বরিস জনসন। কাজেই তিনি রাজনীতি ছেড়ে সেই পথেই পা বাড়াতে পারেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যা মনে হচ্ছে, তিনি সেদিকে যাচ্ছেন না। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে সরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই তার মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। যা তার সমর্থকদের জন্য ব্যাপক আনন্দের হলেও সমালোচকদের জন্য বিভীষিকার।
সুনাকের সরাসরি পূর্বসূরি লিজ ট্রাস আবারও প্রার্থী হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে হাউস অব কমনসে নিজের কাজ শেষ হওয়ার আগেই দুই পূর্বসূরির মুখোমুখি হতে পারেন ঋষি সুনাক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন সহজ করে দেয়ার কোনো আভাস তাদের তরফ থেকে মিলছে না। যেমন, সুনাকের নতুন অনশোর উইন্ডফার্ম নির্মাণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের দলে নাম লিখেয়েছেন জনসন ও লিজ ট্রাস। অনশোর উইন্ডফার্ম বলতে বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থল টারবাইন বোঝায়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে তার নীতি পরিবর্তনে অন্তত ৩০ টরি এমপি চাপ দিয়েছেন। সেই দলে সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীও রয়েছেন। কিন্তু সুনাক তাদের কাছে মাথা নোয়াবেন বলে মনে হচ্ছে না।
রাজনীতিতে টিকে থাকতে বরিস জনসন কতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ; তা নিয়ে এমপিদের অনেকে সন্দেহ পোষণ করছেন। কিন্তু একটি বিষয় পরিষ্কার যে পার্লামেন্টে তার সরব উপস্থিতি থাকবে। বিভিন্ন সময়ে আকারে-ইঙ্গিতে তিনি তা বোঝাতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর হাউস অব কমনসে ফিরে আসার ক্ষেত্রে টেরেসা মে-কে বেশ কৌশলী ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। কিন্তু বরিস জনসন পার্লামেন্টে ফিরে আসলে তার চারপাশে সবসময় এমপিদের একটা ভিড় দেখা যাচ্ছে। সবসময় রাজনীতিতে তার সরব উপস্থিতি জানান দিয়ে আসছেন।
চলতি সপ্তাহে ‘কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইসরাইলের (সিএফআই) বার্ষিক ব্যবসায়িক ভোজে একই কক্ষে দেখা গেছে ঋষি সুনাক, লিজ ট্রাস ও বরিস জনসনকে। পার্টিতে অংশ নেয়া সবাই দাঁড়িয়ে সুনাককে সংবর্ধনা দিয়েছেন। বরিস জনসনও তা করেছেন। কিন্তু তার জন্য এমনটা ছিল বেমানান।
ঋষি সুনাকের নতুন মাথাব্যথা
এরইমধ্যে দলের মধ্যে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ প্রচারে নেমেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। যিনি আবার বরিস জনসনের কট্টর সমর্থকদের একজন। নতুন প্রচারে নামা সবাই ব্রেক্সিটপন্থী ও জনসনের অনুগত। দলীয় সদস্যদের ক্ষমতায়নে তারা এই প্রচারে নেমেছেন বলে দাবি করছেন।
কারণ কেবল এমপিদের ভোটে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে উঠেছেন ঋষি সুনাক। যেখানে দলীয় সদস্যদের কোনো ভূমিকা ছিল না। এই বিষয়টিকে ইস্যু করে ‘রক্ষণশীল গণতান্ত্রিক সংস্থা’ গঠন করেছেন প্রীতি প্যাটেলরা।
এতে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের অন্তঃকোন্দল শেষ হওয়ার কোনো আভাস মিলছে না। এদিকে টরি পার্টির জ্যেষ্ঠ এমপিদের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে মনে করছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারা হারতে যাচ্ছেন। কেউ কেউ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন, সুনাকের নেতৃত্বে ২০২৪ সালে তাদের বিজয় অসম্ভব। এমনকি পরাজয়ের আভাস পেয়ে সাবেক মন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ও ম্যাট হ্যানককসহ অনেকে আগামী নির্বাচনে লড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
ব্রিটেনের সাবেক একজন মন্ত্রী হাফিংটন পোস্টকে বলেন, পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী না-হওয়ার তালিকা অনেক বড়। অনেক অনেক বড় বড় নাম শোনা যাচ্ছে, যারা আগামীতে দলের হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন না।
ব্রিটিশ রাজনীতিতে উদীয়মান তারকাখ্যাত ডিহান্না ড্যাভিসনসহ (২৯) অন্তত ১৫ টরি এমপি পরবর্তী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে তাদের বিজয় কঠিন হবে কিংবা হেরে যাওয়ার শঙ্কা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ব্রিটিশ জনগণ কোন দিকে মোড় দেবে, তা বোঝা যাবে ২০২৩ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। লেবার পার্টির সামনের সারিতে থাকা নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে টরিদের হারাতে তাদের সামনে অনেক সুযোগ আছে। তবে দলীয় এমপিদের আত্মতুষ্টিতে না ভুগতে পরামর্শ দিয়েছেন লেবার নেতা কিয়ার স্টেমার।
টরি দলের সাবেক এক মন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরাই হেরে যাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করছি। যখন নিজেরা হেরে যাওয়ার কথা বলছি, তখন তা হওয়াই তো স্বাভাবিক। আমাদের ফিরে আসা কঠিন হবে। দল ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের মাথায় নতুন কোনো আইডিয়া অবশিষ্ট নেই। আগামী নির্বাচনে নিজেদের অধিকাংশ আসন ধরে রাখতে পারবো না।
যাই হোক, প্রীতি প্যাটেলের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা আছেন, সবাই ঋষি সুনাকের বিরোধী, আর বরিস জনসনের অনুসারি। এতে টরি দলের বড় দাতাদের একজন লর্ড ক্রুডাসও সমর্থন দিয়েছেন। তাদের দাবি, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দুজন প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন এমপিরা। কিন্তু নির্দেশনা, নীতিনির্ধারণ ও নেতৃত্ব নির্বাচনে দলীয় সদস্যদের আরও ক্ষমতা থাকা দরকার। যেটা বর্তমানে নেই।
লিজ ট্রাস সরে যাওয়ার পর বরিস জনসন আবার যখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে নামেন, তখন তিনি ও তার সমর্থকরা দাবি করেন, যদি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কিংবা অপসারণের ক্ষমতা এমপিদের বদলে দলীয় সদস্যদের হাতে থাকতো, তবে তিনি ফের বিজয়ী হতে পারতেন।
কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক প্রধান জেক ব্যারি আরেক ধাপ এগিয়ে বলেন, আমি মনে করি বরিস জনসন আবার ফিরে আসবেন। কিন্তু কখন আসবেন, তা বলতে পারছি না। আমার ধারণা, তিনি স্বমহিমায় ফিরবেন। তিনি কনজারভেটিভ পার্টিকে এতো ভালো বোঝেন যে তার ফিরে আসা অনেক সহজ হবে।
তিনি জানান, জনমত জরিপে যদি লেবার দল কনজারভেটিভদের চেয়ে ২০ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকে, তাহলে এর সমাধান বের করতে বরিস জনসনকে সামনে নিয়ে আসতে পারেন এমপিরা। কারণ তার বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। পার্লামেন্ট ও তার বাইরে জনসনের ফিরে আসার কাঠামো তৈরি হয়ে আছে।
ঋষি সুনাকের ভবিষ্যৎ
সাপ্তাহিক স্পেকটেটরের উপরাজনৈতিক সম্পাদক ক্যাটি বলসের মতে, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে ব্যর্থ হলে ঋষি সুনাককে দলের মধ্যে অনেক বেশি বিদ্রোহের মুখোমুখি হতে হবে। এমপিরা যেমন বিরোধী হয়ে উঠবেন, তেমনই তারা পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিরাও রয়েছেন। তারা পুরোদমে সরব হয়ে উঠবেন। যদিও ব্রিটিশ সরকারের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী নির্বাচনের আগেই বরিস জনসন ফিরে আসছেন, এমপিরা এমনটি ভেবে থাকলে আত্মপ্রতারণা হয়ে যাবে।
কিন্তু বরিস জনসনের ভিত্তিও একেবারে নড়বড়ে না। তিনি যে কোনো সময় পূর্ণশক্তি নিয়ে রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারেন। এর বাইরে সুনাকের সামনে বড় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম শোনা যাচ্ছে না। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ২০২৩ সালের প্রতিকূলতাগুলো মোকাবিলা করতে হলে কেবল অর্থনৈতিক ও জনসেবা খাতে অগ্রগতি দেখালেই হবে না; তাকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও সমালোচকদেরও কোণঠাসা করে রাখতে হবে। আর সেটা অবশ্যই তার সফলতার মধ্য দিয়ে হতে হবে।
সুনাকের ব্যর্থতার প্রভাব অভিবাসীদের ওপর
ব্রেক্সিট পরবর্তীতে ব্যাপক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। গেল কয়েক মাসে দেশটিতে সেই পরিস্থিতি আরও চরম রূপ নিয়েছে। বরিস জনসন ও লিজ ট্রাসের পর প্রধানমন্ত্রী হন ঋষি সুনাক। যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে উদযাপিত হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে জোরালো বাণিজ্য সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিদেশি বিনিয়োগ আসে যুক্তরাজ্য থেকেই।
আর বাংলাদেশি পণ্য রফতানিতে বিশ্বে তৃতীয় যুক্তরাজ্য। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ব্রিটেন। মিয়ানমারকেও চাপ দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঋষি সুনাক সরকার সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাজনীতি পাশে ঠেলে উপনিবেশ-পরবর্তী ইতিহাসে নজর দেন যুক্তরাজ্যের পূর্ব আফ্রিকান এশিয়ান কমিউনিটি। লিসেস্টারের সাবেক লর্ড মেয়র মঞ্জুলা সুদ বলেন, একজন এশীয় ডাউনিং স্ট্রিটে উঠেছেন, যা ব্রিটেনের জন্য গর্বের। সবকিছুই যে বর্ণবাদী, তা আমি বলবো না, তবে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আমাদের এ পর্যন্ত আসতে হয়েছে।
ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়া পূর্ব আফ্রিকান এশিয়ান কমিউনিটির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন টরি পার্টির দাতা লর্ড জিতেশ গাধিয়া। তিনি বলেন, এতে অভিবাসীরা ব্যাপক অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাদের জীবনমানে উন্নতি হবে বলেও প্রত্যাশা বেড়েছে।
সুনাকের বাবা যুক্তরাজ্যে এসেছেন কেনিয়া থেকে আর মা তানজানিয়ার। লেখাপড়ার সময় তাদের মধ্যে পরিচয় ঘটে। পরে তারা বন্দরনগরী সাউদাম্পটনে স্থায়ী হন। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। পূর্ব লন্ডনের নুসাউন্ড রেডিওর স্বত্বাধিকারী ট্যারি সিয়ান বলেন, যখন আপনি সিঁড়ি বেয়ে অনেক ওপরে উঠে যাবেন, তার মানে আপনি আগের ধাপগুলো ভুলে যাবেন না। ঋষি জানেন যে তিনি কোথা থেকে এসেছেন, তারা বাবা-মা কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
সবমিলিয়ে ঋষি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এশীয় কমিউনিটিতে যে উচ্ছ্বাস ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা কতটা পূরণ হবে; তা এখনই হলফ করে বলা যাচ্ছে না। তবে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হলে ব্রিটেনে অভিবাসীরা যে কঠিন সময় পার করছেন, তাতে আরও হতাশা বাড়বে।