ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় এই দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কাছাকাছি সময়ে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আজ মধ্য রাতের মধ্যে এই সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ও আগামীকাল ১০ মে সন্ধ্যার পূর্বে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ও ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে মোখা।
জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা দেখা গেছে যে, আজ সন্ধ্যা ৭টার সময় সুস্পষ্ট নিম্নচাপটির কেন্দ্রের অবস্থান ছিল ৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপরে। আন্দামান দ্বীপের পোর্ট ব্লেয়ার বন্দর থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। সুস্পষ্ট নিম্নচাপ যে স্থানে অবস্থান করছে সেই স্থানের সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই স্থানে উলম্ব বায়ু শিয়ারের মান ৫ থেকে ১৫ এর মধ্যে; যা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও টিকে থাকার জন্য অদর্শ পরিবেশ। সুস্পষ্ট নিম্নচাপ কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৩ থেকে ৫২ কিলোমিটার পরিমাপ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, নিম্নচাপ কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটার কিংবা তা অপেক্ষা বেশি হলে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় নামকরণ করা হবে। সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি বর্তমানে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তরদিকে অগ্রর হচ্ছে ও আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ বিকেল ৩টার সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার ৫১টি সম্ভব্য যাত্রাপথের বেশিভাগ পথ নির্দেশ করতেছে ঘূর্ণিঝড় মোখা (সম্ভব্য) চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার সর্বোচ্চ আশঙ্কার কথা।
বেশিরভাগ এনসেম্বল সদস্য নির্দেশ করছে স্থল ভাগে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড় মোখার বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। ওপরে উল্লেখিত গতিবেগে ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় এই দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টি দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা (সম্ভব্য) টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা প্রবল।