দেশে ডেঙ্গুজ্বরে প্রাণহানির সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে মারা গেছেন ১৬৫ জন। এটি অবশ্য যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তাদের সংখ্যা। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো- প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
গত সোমবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৮০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯১৯ ও ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৫৬১ জন। সোমবার ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ১৮ জনের মধ্যে ১১ জন ঢাকার বাসিন্দা আর সাতজন ঢাকার বাইরের। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৮৯১ জন।
তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৪৩ হাজার ৬৬৫ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪৪ হাজার ২২৬ জন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৭৮ হাজার ৪৪ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ হাজার ৪৩১ জন।
২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। তবে চলতি বছরের সাড়ে সাত মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩১৮ জন এবং ঢাকার বাইরের ৯৮ জন। ডেঙ্গুজ্বর দেশের মানুষের মধ্যে এতটাই আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে যে, কেউ সাধারণ মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত হলেও ছুটে যাচ্ছেন চিকিৎসকের কাছে।
চিকিৎসকরাও তাদের পাঠাচ্ছেন বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু আছে কি না তা নির্ণয়ে। নিম্নবিত্তদের জন্য যা সাক্ষাৎ অভিশাপ হয়ে দেখা দিচ্ছে। সাধারণত আগে যারা ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন কিংবা যাদের শরীরের ওজন বেশি তাদের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুদের জন্যও ডেঙ্গু প্রাণঘাতী রোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ডেঙ্গু মোকাবিলার সর্বোত্তম উপায় হলো- মশা নিধনে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করা। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেলেও এ বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ না থাকা দুর্ভাগ্যজনক।
লেখক: জাতীয় পার্টির (জাপা) সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী।