স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে নেত্রকোনার তরুণী লিমা আক্তার মৌ (২৩) কুমিল্লার দেবীদ্বারে প্রেমিকের বাড়িতে এসে অবস্থান নিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ৩নং ওয়ার্ডের ফতেহাবাদ পশ্চিম চান্দারপার গ্রামের মৃত মোবারক হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেত্রী কামরুন্নাহার শিল্পী বেগমের বাড়িতে তাদের ছেলে ইমরানের স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে অবস্থান নেয় ঐ তরুণী।
অবস্থান নেয়া তরুণী লিমা আক্তার জানান, তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার দোবারোহী গ্রামে। তার বাবার নাম মোঃ লিটন তালুকদার। সে এইচএসসি পাশ করে বোন রুমা আক্তারের সাথে ঢাকার রামপুরার বনশ্রী এ-ব্লকে ভাড়া বাসায় থাকতো। গ্লোবাল এজেন্সি কোম্পানিতে চাকরি নেয়ার পর একসাথে চাকরিকালে দেবীদ্বারের ছেলে ইমরানের সাথে তার পরিচয় হয় এবং পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
পরবর্তীতে ইমরান বিয়ের প্রলোভনে লিমা আক্তারকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একই বাসায় ৪ মাস একত্রে বসবাস করে। এসময় ইমরানের সন্তান তার গর্ভে এলে তাকে গর্ভপাত করানো হয় বলেও জানায় ভুক্তোভোগী। কিছুদিন যাবৎ ইমরান তার ফোন নাম্বার ব্লকলিস্ট করে রেখেছে। ঐ তরুণীর সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগও করছে না। তাই ভুক্তভোগী ইমরানের মাকে ফোনে বিষয়টি জানায়। কিন্তু ইমরানের মা তার কথার কোনো কান দেননি। তাই বাধ্য হয়ে আজ মঙ্গলবার সে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে অবস্থান নেয়।
সে আরো জানায়, এই বাড়িতে অবস্থান নিতে এলে ইমরানের মা ও বাড়ির অনেক মহিলারা মিলেই তাকে মারধর করে। তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়, পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মোবাইল ফেরত পায় সে। রাত ৮টা পর্যন্ত তরুণী ঐ বাড়িতেই আছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে ছেলের মা কামরুন্নাহার শিল্পী বলেন, ‘ছেলের সাথে আমার অনেকদিন কথা হয় না। এই মেয়ে বলছে সে আমার ছেলের সাথে ৪ মাস সংসার করেছে একই ছাদের নিচে। বিয়ে ছাড়া কি করে একসাথে সংসার করে ? আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এটি একটি চক্রান্ত হতে পারে।’
পৌর ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাঈমুল ইসলাম সুমন বলেন, পৌরসভায় আমরা যখন মিটিং করছিলাম তখন মৌখিকভাবে সে বিষয়টি বলে চলে আসে। নিরাপত্তা চেয়ে পৌরসভায় একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আগামীকাল অফিসে গেলে চিঠি হাতে পেলে বিস্তারিত জানতে পারবো। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে ইমরানের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার আস্বস্থতায় এখন তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর (২৬ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার রাতে জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর নিজ দায়িত্বে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার আস্বস্তে তরুণীকে বাড়িতে পাঠিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি বলে এ বিষয়ে কোনো ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি।