টাঙ্গাইলে সংখ্যালঘু এক শিক্ষকের ওপর হামলা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা তাকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকালে সদর থানার গোসাই জোয়াইর গ্রামে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত শিক্ষকের নাম সুবীর চন্দ্র রায়। তিনি আজিম মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা গেছে, গত বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে আজিম মেমোরিয়াল স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ছিলো। সুবীর চন্দ্র রায় ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য। মিটিং শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গোসাই জোয়াইরের রাস্তায় কয়েকজন সন্ত্রাসী তার ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা লাঠি ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুবীর চন্দ্র রায়ের মাথায় আঘাত করে। তিনি এ সময় চিৎকার শুরু করলে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহত সুবীর চন্দ্র রায়কে টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
হামলাকারীদের মধ্যে নূরুল ইসলামের ছেলে আক্কাস আলীকে চিনতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন সুবীর চন্দ্র রায়। তিনি জানান, হামলার সময় তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে আক্কাস আলী স্থানীয় তুষার মাস্টারের মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, গোসাই জোয়াইর গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে আক্কাস আলী এবং হামলার পরিকল্পনাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে সুবীর চন্দ্র রায় এবং তার পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে আসছিলো। তারা সুবীর চন্দ্র রায় এবং তার পরিবারকে হুমকি ধামকি ও এলাকা ছাড়ার জন্য বলপ্রয়োগ করছিলো।
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সুবীর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে পূজামন্ডব তৈরি হয়। এজন্য আক্কাস আলী ও তার সহযোগীরা সুবীর চন্দ্র রায়ের কাছে চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা না দেয়ায় এবং সাম্প্রদায়িক সম্পৃীতি বিনষ্ট করতে সুবীর চন্দ্র রায়কে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত হামলা করে।
আহত শিক্ষক সুবীর চন্দ্র রায় স্থানীয়দের কাছে সজ্জ্বন হিসেবে সম্মানিত। তার পিতার নাম হিরেন্দকুমার রায়। ন্যাক্কারজনক এ হামলায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সুবীর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে ২৬ অক্টোবর সকালে আজিম মেমোরিয়াল স্কুলের সামনে ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। এ সময় তারা দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। এ হামলার পেছনে কারা রয়েছে, সেটা খুঁজে বের করে তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি করেছে এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীরা।