নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গীয়ে জোরপূর্বক দোকান ছাড়ার হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে উত্তরা আমির কমপ্লেক্স বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সোবাহানের বিরুদ্ধে । এ ঘটনায় ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার আরিয়ালখার হাট বাঁশ বাড়ীর, ইমান্দি খাঁর ছেলে লাবণ্য জুয়েলার্সের মালিক গিয়াস খাঁ গত ২৫/০৪/২০২৫ ইং তারিখ ১/ কাজী হাদিসুর রহমান পিতাঃ আতিয়ার রহমান ২/হাজী আব্দুস সোবান পিতা আব্দুল মজিদ ৩/তোসাদ্দেক আহমেদ খান কিরণ ৪/ মোহাম্মদ শাহিন ৫/মোঃ মনিরকে বিবাদী করে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ একটি ডায়েরি করেন যাহার নং ২০০৫। লাবণ্য জুয়েলার্সের মালিক গিয়াস খাঁ ও কর্মচারিকে মারধর, স্বর্নের দোকানের মালামাল চুরি করে ব্যবসায়ীক ক্ষতি সাধন, দোকানে তালা লাগিয়ে বন্ধ করার হুমকি,রাতের আধারে লাবণ্য জুয়েলার্সের দোকানে আগুন লাগিয়ে চরম ক্ষতিসাধন ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ২৫/৪/২০২৪ ইং তারিখ উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন লাবণ্য জুয়েলার্সের মালিক গিয়াস খাঁ। জিডি সূত্রে জানা যায়, উত্তরা আজমপুর এলাকার আমির কমপ্লেক্স ২য় তলায় গত ১/১১/২০২১ ইং তারিখ জনৈক কাজী হাদিসুর রহমান এর নিকট হইতে পাঁচ বছর মেয়াদে মাসিক ২৪ হাজার টাকা ভাড়া ধার্য্য করে একটি দোকান ঘর ভাড়া নেন। দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে তিনি লাবণ্য জুয়েলার্স নামে একটি স্বর্নের দোকান করে ব্যবসা শুরু করেন। জিডি সুত্রে আরো জানা যায়, প্রথমে তার ব্যবসার অবস্থায় ভালো ছিল না,পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তার পরিচিতি বাড়ে। পরিচিতি বাড়ার সাথে সাথে তার ব্যবসা ও ভালো ভাবে চলতে থাকে। গিয়াছ খাঁ-র ব্যবসার অবস্থা ভালো দেখে ইর্শার্নিত হয়ে বিবাদী কাজী হাদীসুর রহমান সাত আট মাস আগে তাকে দোকান ছেড়ে দিতে বলে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এবিষয়ে বিবাদ মেটাতে উত্তরা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যস্থতায় মৌখিকভাবে বিষয়টি সমাধান করা হয়।এ সময় দোকানের পজিশন মালিক ও ভাড়াটিয়ার চাহিদা অনুযায়ী মাসিক ২৪ হাজার টাকা হইতে ১১ হাজার টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করে ৩৫ হাজার টাকা ভাড়া ধার্য্য করা হয়। সে সময়ে আরো উল্লেখ করা হয় যেহেতু এটি প্রথম মেয়াদের চুক্তি সে হিসেবে মেয়াদের পুরো পাঁচ বছর গিয়াস খাঁ দোকানদারি কবরে। সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়াটিয়া গিয়াস খাঁ দোকানের পজিশন মালিককে গত সাত মাস যাবত মাসিক ৩৫০০০/- পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা করে ভাড়া প্রদান করে আসছে। জিডি সূত্রে আরো জানা যায়, গত ২৫/০৪/ ২০২৪ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১.০৫ ঘটিকার বিবাদী কাজী হাদীসুর রহমান ও বিবাদী হাজী আব্দুস সোবহান মিলে তাদের সহযোগী তোসাদ্দেক আহাম্মদ খান কিরণ, মোঃ শাহিন, মোঃ মনিরসহ আরো কয়েক জনকে সাথে নিয়ে লাবণ্য জুয়েলার্স দোকানে গিয়ে ম্যানেজার ইফতেখার আহম্মদ জুয়েলকে একদিনের মধ্যে তাদের জুয়েলারি দোকান বন্ধ করে চলে যেতে বলে। এসময় তারা ম্যানেজারকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং ১ দিনের মধ্যে দোকান বন্ধ করে না গেলে তার ক্ষতি হবে বলে শাসায়। তারা আরো বলেন প্রয়োজনে তারা নিজেরাই লাবণ্য জুয়েলার্স দোকানে তালা লাগিয়ে দিবে বলে হুমকি ও ভয় ভীতি প্রদান করে।
সরেজমিনে উত্তরা আমির কমপ্লেক্স ২য় তলায় গিয়ে গোপন এক ভিডিও ফুটিজে দেখা যায়, পারমা জুয়েলার্সের মালিক,আমির কমপ্লেক্স বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী আব্দুস সোবহান লাবণ্য জুয়েলার্সের ম্যানেজারকে বলেন, এমপি মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে আজ রাত আটটার মধ্যে দোকান ছেড়ে দিতে হবে।এ ঘটনায় মার্কেটের দোকানদারদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে আমির কমপ্লেক্স বণিক কল্যাণ সমিতির সহ- সভাপতি সুলতান আহমদ বলেন লাবণ্য জুয়েলার্সের মালিকের উপর জুলুম করা হচ্ছে, সমিতির সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতায় বার বার এধরণের অনাকাংখিত ও বিতর্কিত ঘটনার জন্ম নিচ্ছে ।এসময় তিনি আরো বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সমিতির নেতাদের উচিত দোকানদারদের পাশে থাকা।
দোকানদার সুজন বলেন,আমরা মার্কেটে ব্যবসা করি একসাথে চলা ফেরা করি। দোকানদারদের সাথে খারাপ কিছু হলে ইমানি দায়িত্ব হিসেবে উচিত কথা বলতে হয়। উচিত কথা বলতে গিয়ে কখনো কখনো রোষানলে পড়তে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো কয়েকজন দোকানদার বলেন, সমিতির সভাপতি অনেকের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। ওনার ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। এম পি মহোদয় নামে ব্যবসায়ীকে হুমকি প্রদান, জোরপূর্বক অন্যের দোকানে তালা মারার বিষয়ে উত্তরা আমির কমপ্লেক্স বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সোবহানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা দুই পক্ষের সাথে কথা বলে আপোষ মিমাংসা করে দিয়েছি। তারা আমাদের কথা না মেনে থানা পুলিশে অভিযোগ করেছে। বিষয়টি এখন থানা পুলিশ দেখবে।
জোরপূর্বক দোকান বন্ধ করে দেওয়া ও হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে জিডি-র তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ ফারুক মিয়া বলেন,হাদিসুর রহমানকে দোকান বুঝাইয়া দেওয়ার বিষয়ে লাবণ্য জুয়েলার্সের ম্যানজারের সাথে সভাপতির কথা হয়েছে এ বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে আগামীকাল অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করবেন তিনি। অনুমতি পেলে দুই পক্ষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ব্যবস্থা নিবেন।