নিজস্ব প্রতিবেদক: আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর পুরনো কট্টর রূপে ফিরতে শুরু করেছে তালেবান। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পর বিদেশি এনজিও থেকেও নারীদের বিদায়ের নির্দেশ দিয়েছে। এসব কারণে আফগানিস্তানকে এড়িয়ে চলছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ। আর এই সুযোগে একা হয়ে পড়া তালেবানের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। কিন্তু আফগানিস্তানের প্রতি বেইজিংয়ের এই আগ্রহের মূলে কী, তা জানিয়েছেন কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। শুক্রবার (৩১ মে) টোলো নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আফগানিস্তানের তালেবান অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে যে, তারা বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড (বিআরআই) উদ্যোগের অধীনে চীনের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে। তিন বছর আগে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আফগানিস্তানের অর্থনীতি ক্রমাগত ধসে পড়ার মধ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের মতে, কাবুল ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে।
কাতারের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত বলেন, আফগানিস্তানের অগ্রগতিতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ কারণে চীনের কথা অন্যদের চেয়ে আফগানিস্তানে বেশি শোনা যায়। কিন্তু চীন কি আফগানিস্তানের নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশী?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চীন আফগানিস্তানের জনগণের প্রতি নয়, আফগানিস্তানের খনিগুলোর প্রতি আগ্রহী। কাবুলের উচিত এটিকে তার সুবিধার জন্য ব্যবহার করা। আফগানিস্তানের মনে রাখতে হবে, যে পরাশক্তি হওয়ার দৌড়ে চীনেরও প্রয়োজন আফগানিস্তানকে। কেননা চীনের উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের জন্য একটি স্থিতিশীল আফগানিস্তান প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, গত ১০ বছরে চীনের অনেক উচ্চ পর্যায় সরকারি প্রতিনিধিদল কাবুল সফর করেছে। অতীত ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় ১৯৬৬ সালে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পলিটবুর্যোর সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল আফগানিস্তান সফরের পর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে পলিটবুর্যো সদস্য এবং নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ঝাও ইয়ংকাং কাবুল সফর করেন। এরপর গত ১০ বছরে এ রকম কয়েকটি সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেইজিংয়ে আয়োজিত হয় পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও চীনের অংশগ্রহণে প্রথম ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা সম্মেলন। চীন তখন থেকেই আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। আফগানিস্তান থেকেও গত ১০ বছরে অনেক উচ্চ পর্যায় প্রতিনিধিদল বেইজিং সফর করেছে। কারণ চীনের বিবেচনায় এটি ছিল যে যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী আফগানিস্তানে তারা গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা সহযোগী হতে পারে।