আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ অমর্ত্য মনে করেন, ভোটের ফলাফলই বলে দিচ্ছে ভারত যে ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ নয়, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বলেন, রামমন্দির নির্মাণে বিপুল পরিমাণে অর্থ খরচ হয়েছে। এই বৈভব দেখানোর কারণ ছিল ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বলে প্রতিপন্ন করা। কিন্তু, মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সুভাষচন্দ্র বসুর দেশে তা হওয়ার কথা নয়। এই চেষ্টার ফলে ভারতের অন্তরাত্মাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এই প্রয়াস ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন চাই, বলেন অমর্ত্য সেন।
এছাড়া বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের বিনা বিচারে বন্দি রাখার যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়েও অসন্তোষ জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন বুধবার জোর দিয়ে বলেছেন, ভারত যে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ নয় তা সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল সবার সামনে এই সত্যটি তুলে ধরেছে।
নতুন আইনবিধিতে সঠিক বিচার ছাড়া মানুষকে লাগাতার গারদে ভরে রাখার বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন সেন। এমনকী বিজেপি সরকারের সরাসরি সমালোচনা করে বলেন, এই পদ্ধতি কংগ্রেস আমলের তুলনায় বিজেপি সরকারের সময়ে বেশি প্রয়োগ হচ্ছে।
অমর্ত্য সেনের কথায়, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আমার অনেক কাকা ও তুতো ভাইদের বিচার ছাড়াই জেলে পুরে রাখা হয়েছিল। আমরা তখন ভাবতাম, একদিন ভারত এই অত্যাচারের হাত থেকে মুক্ত হবে। কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরেও এই প্রক্রিয়ার কিছুমাত্র বদল ঘটেনি। কোনও বদল আসেনি। কিন্তু, বর্তমান সরকারের জমানায় সেটা আরও বেড়ে গিয়েছে।
নোবেলজয়ী বলেন, নতুন মন্ত্রিসভার সঙ্গে আগের খুব একটা বদল ঘটেনি। মন্ত্রীরাও প্রায় সকলেই একই মন্ত্রক পেয়েছেন। সামান্য অদলবদল হলেও রাজনৈতিক ক্ষমতাশালীরা এখনও শক্তিশালীই রয়ে গিয়েছেন। রাজনীতিকে মুক্তমনা হতে হবে, বিশেষ করে আমাদের মতো ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের দেশের ক্ষেত্রে। তাঁর দৃষ্টিতে বেকারি বেড়েই চলেছে এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্র প্রচণ্ড উপেক্ষিত এই দেশে।