বিনোদন প্রতিবেদকঃআগুনে পুড়েছে জলের গানের ভোকাল, যন্ত্রশিল্পী রাহুল আনন্দের বাড়ি। এ নিয়ে গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হয় নানামাত্রিক আলোচনা, সমালোচনা, নিন্দা। এমনকি ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমও রাহুলের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার শুরু করে।
আজ (১৩ আগস্ট) মঙ্গলবার আবারও নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা। সেখানেও ভুক্তভোগী শিল্পী রাহুল আনন্দ। সত্যিই কী ঘটেছিল বাড়িটি ঘিরে?
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, পরিকল্পিতভাবে এ আগুন দেয়া হয়। এক সাক্ষাকারে রাহুল আনন্দ জানান, স্ত্রী- সন্তান নিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে কোনো মতে বের হয়ে এসেছিলেন তিনি। তবে এখন শোনা যাচ্ছে ভিন্ন কথা।
রাহুল আনন্দের পারিবারিক বন্ধু ফারহানা হামিদ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানান, রাহুল আনন্দের বাসা উদ্দেশ্য করে আগুন দেয়া, লুটপাট বা ভাংচুর করা হয়নি। তিনি লিখেন, ‘আগুন দেয়া হয়েছে ৩২ এর “বর্তমান বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম ও তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ” সেটুকুতে। রাহুলদা একটা একতলা বাসায় ভাড়া থাকতেন। একপাশে তাদের সংসার, অন্য পাশে জলের গানের স্টুডিও (অনেকের ভিডিওতে এই বাসাটা নিয়ে ভুলভাল কথা বলতে দেখেছি আমি)। সেই বাড়িটা ব্যক্তি মালিকানায় ছিলো। ৩২ এর সেখানে আরো অনেক এমন বাসা আছে। রাহুলদা ও তার পরিবারের দুর্ভাগ্য এই মায়াময় বাসাটা নতুন মিউজিয়াম এর দেয়াল ঘেষে এবং সান্তুরের পিছনে ছিলো, তাই তার বাসাতেও আগুন দেয়া হয়।’
তিনি আরও লিখেন, ‘রাহুলদাকে উদ্দেশ্য করে আগুন দিলে তারা এই পরিবারকে এভাবে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতো না। আর সুযোগ না দিলে সেই বাসা থেকে বের হওয়া অসম্ভব। রাহুলদার বাসায় আগুনের সাথে রাহুলদার ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতি এর কোন সম্পর্ক নেই। তাই এমন গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। দেশের এই পরিস্থিতিতে যেকোনো গুজব ভয়াবহ রুপ নিতে পারে। আমরা সচেতন হই।একটা সংসার ,একটা দলের বহুদিনের সাধনা, একজন বাচ্চার শৈশব এর সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। আর কারো কোন কিছু পুড়ে না যাক। ভালোবাসা নেমে আসুক মানুষের মনে , আপনারা তাদের পাশে থাকলে আবার “Joler Gaan” এর সাথে গলা মিলিয়ে গান গাইবো- “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রানী সে যে- আমার জন্মভূমি।’
ফারহানা হামিদের এই লেখাটি আবার জলের গানের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হয়েছে। শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লিখা হয়েছে, প্লিজ লেখাটা পড়ুন ও সত্য জানুন। আমরাই গড়ব সাম্যের বাংলাদেশ। ভালোবাসি আমার সোনার বাংলা। আগামী সুন্দর হোক।
*** জলের গানের প্রতিটা বাদ্যযন্ত্র দীর্ঘ সময় নিয়ে হাতে বানানো এবং প্রায় সকলের চেনা। কোথাও কেউ কোন কারণে খুঁজে পেলে তা ফেরত দেয়ার অনুরোধ করছি।
(আমি ব্যক্তিগতভাবে কোথাও আগুন দেয়ার পক্ষেই না। বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম এর মতো দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস এ আগুন দেয়ার পক্ষে তো অবশ্যই না।এই সময়ে সংখ্যালঘু এর উপর আক্রমণ এর বিষয় আমি অবগত এবং এর ঘোর বিপক্ষে। কিন্তু তার মানে এই না-যে বাসা ধর্ম, বর্ণ,জাত, সংস্কৃতি এর কারনে আক্রমণ করা হয় নাই কিন্তু কোন কারনে গুজব ছড়াচ্ছে আর সেই গুজবকে গুজব বলা যাবে না)’