শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বিপৎসীমার উপরে হালদার পানি, বেড়িবাঁধের ১৬ স্থানে ভাঙন

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৮ বার পঠিত

সিটিজেন প্রতিবেদকঃটানা বর্ষণ ও হালদা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা দিকে হালদার পানি নারায়ণহাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৮ মিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে ধুরুং ও হালদা নদীতে ধারণক্ষমতার বেশি পানি প্রবাহিত হতে থাকে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হালদার পানি নারায়ণহাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৮ মিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা আলী আকবর জানিয়েছেন, উজান থেকে আসা পানির স্রোতে উপজেলার নারায়ণহাট, ভুজপুর, পাইন্দং, লেলাং, সমিতিরহাট, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিলসহ এই উপজেলার অধিকাংশ নিচু এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

বন্যায় হালদা নদীর পয়েন্টে থাকা বাঁধের ১৬টি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হালদা নদী ছাড়াও লেলাং খাল, ধুরুং খাল, সর্তা খাল, ফটিকছড়ি খাল, মন্দাকিনী খাল, গজারিয়া খাল, তেলপারি খাল, কুতুবছড়ি খালের তীর ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকছে।

ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অন্তত ৩ লাখ মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজ্জামেল হক চৌধুরী বলেন, পৌর সদর ছাড়া উপজেলার সব ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় লোকজনকে আশ্রয় দিতে আমরা ৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছি।

এদিকে বুধবার সকাল ছয়টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে চট্টগ্রামসহ আশপাশের জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্য এবং আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা ও ফেনী জেলায় ২০০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি জেলার বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির শঙ্কা রয়েছে। বৃদ্ধি পেতে পারে ফেনী, হালদা, কর্ণফূলী ও সাঙ্গু নদীর পানি প্রবাহ।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (আজ সকাল ৯ টার সময় পাওয়া তথ্য অনুসারে)। যেহেতু আজ সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে ও আজ সারারাত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে অতিক্রমের প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, দেশব্যাপী চলমান এই ভারী বৃষ্টি আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। আগামী শুক্রবার থেকে এই বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com