আন্তর্জাতিক ডেস্কঃউত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় বুধবার ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানকার ৮ জেলার আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ।এই বন্যায় ইতোমধ্যে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ত্রিপুরা রাজ্যের আটটি জেলার ৬ হাজার ৬০০ পরিবারের ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যায় এক হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজ্যের রাজস্ব বিভাগ জানিয়েছে, পানিতে ডুবে এবং ভূমিধসের কারণে দশ জন মারা গেছে এবং দুজন আহত হয়েছে।
ত্রিপুরায় সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টায় ভূমিধস ও অবিরাম বর্ষণে ডুবে একই পরিবারের তিনজনসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অতিরিক্ত ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) কর্মীদের মোতায়েন করার কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর, কৈলাশহর, উনাকোটি জেলার কুমারঘাট, ধলাই জেলার কমলপুর, লংট্রাইভ্যালি এবং গন্ডাচেরা, সেপাহিজলার বিশালগড় ও সোনামুড়া, খোয়াই জেলার তেলিয়ামুরা ও খোয়াই, উদয়পুর, কারবুক ও অমরপুর, গোমতি জেলার সবুরু, সাবরুম।
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সান্তিরবাজার এবং আগরতলা শহরসহ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সদর ও জিরানিয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা এবং বন্যার মতো পরিস্থিতি দেখা গেছে। উদ্ধারকারী দলগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য চব্বিশ ঘণ্টা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ত্রিপুরা ছাড়াও মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্রস ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যও বন্যা কবলিত। বিভিন্ন রাজ্যে অন্তত ২২ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে। নিখোঁজ রয়েছে আরো বেশ কয়েকজন। আশ্রয় হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে হাজারো মানুষ। বন্যার পানির তোড়ে নিখোঁজ বেশ কয়েকজন।
এদিকে ত্রিপুরার ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে রাজ্যটির প্রশাসক। এই বাঁধ খুলে দেয়ায় ভারতের পানি ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশে। যা সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে খুলে দিয়েছিল ভারত। গোমতী জেলার জেলাশাসক তরিৎ কান্তি চাকমা এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যাণ্ডেলে জানিয়েছেন, গোমতী নদীতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ার ফলে ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের জলস্তরও বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছিল। বাঁধ বাঁচাতে গেট খুলে জল ছেড়ে দিতে হয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি