বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

নওয়াব হাবিবউল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজে অনিয়মের শেষ নেই

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ৩৪১ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দুই শিক্ষকের মধ্যে টিচার্সরুমে হাতাহাতি ও ধাক্কা ধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় খণ্ডকালীন প্রভাষক মিরাজের বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধাক্কা ধাক্কির এমন ঘটনায় অভিবাবক মহল ক্ষুব্ধ। জানা যায়,শাহজালাল এভিনিউ উত্তরা ৪ নং সেক্টর আজমপুর অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানে গত দুই সপ্তাহ যাবত বিভিন্ন ই্যসুতে শিক্ষকদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসময় অভিবাবকেরা বলেন,অবৈধভাবে ক্ষমতা ও চেয়ার দখলকে কেন্দ্র করে এই প্রতিষ্ঠানে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও নওয়াব হাবিবউল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষানীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া আইন না মেনে সার্টিফিকেট জাল-জালিয়াতি করে চাকুরী নেওয়ার ও অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে (১)পরীক্ষার টেবুলেশন শীটে জালিয়াতি (২)পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উল্লেখিত পদসংখ্যার চেয়ে বাংলায় ও অর্থনীতিতে বেশি নিয়োগ(৩) নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়া এক জন প্রভাষক নিয়োগ (৪)কলেজ শাখায় প্রভাষক নিয়োগের সময় বোর্ড থেকে সরকারি/ ডিজি প্রতিনিধির মনোনয়ন না নেয়া (৫) নিয়োগ পরীক্ষায় মেধায় ১ম স্থান অধিকারীকে বঞ্চিত করে অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে ২য় স্থান পাওয়া শিক্ষককে এমপিওভুক্তি করণ (৬) নন – এমপিও থাকা অবস্থায় শিক্ষানীতি না মেনে ব্যক্তিগত স্বার্থে এমন কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়াসহ নানাবিধ অনিয়মের চিত্র উঠে আসে।

সুত্রে আরো জানা যায়,এসব জাল-জালিয়াতি ও অপকর্মের ঘটনায় তৎকালীন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সমর্থিত কয়েকজন প্রভাবশালী প্রভাষক জড়িত। একাধিক সুত্রে জানা যায়, এদের মধ্যে বাংলা বিভাগ, ইংরেজী বিভাগ,ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা,হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ, উদ্ভিদবিদ্যা ও গণিত বিভাগের কয়েকজন প্রভাষক জড়িত রয়েছে। জানা যায়,ছাত্র- জনতার আন্দোলনে সহযোগিতা না করে এসব অসাধু শিক্ষকগণ বিগত সময়ে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহ পালিত হয়ে কাজ করেছে। বর্তমানে ঐ স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকেরা লেবাস পাল্টিয়ে স্কুলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।তাদের এহেন অবৈধ কাজ কর্মে সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি নষ্ট হতে চলেছে । অভিবাবক ও শিক্ষার্থীদের সুত্রে জানা যায়,শ্রেণি শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারণে গত ২০/০৯/২০২২ ইং তারিখ দিবা শাখার সহকারী অধ্যাপক বাহাদুর হোসেন ক্লাস চলাকালীন সময়ে ২৬ জন শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা গুরুতর আহত হয়। এঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে গত ১৬/১১/২২ ইং তারিখ ভিক্টিম মোঃ লাজু আহমেদ, সি এম এম আদালতে শিশু আইন,২০১৩ এর ৭০ ধারায় মামলা করে। ঐ সময় প্রশ্নফাঁস, কোচিং বাণিজ্য ও শ্রেনীকক্ষে শিক্ষার্থীদের মারধর ঘটনায় কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ইংরেজি বিভাগের খন্ডকালি শিক্ষক বাহাদুর হোসেনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।সে সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রাব্বানীকে ম্যানেজ করে কলেজে ঢুকেন । স্থানীয় অভিবাবকেরা জানান,উত্তরার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন হিংস্র মনোভাবের শিক্ষকরা “শিক্ষা আইন”কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া শিক্ষা সনদ জাল করে কি ভাবে এখনো বহাল তবিয়্যতে রয়েছে ! তা-তাদের বোধগম্য নয়। জানা যায়, গত রবিবার সকাল আনুঃ ৯ টায়, নওয়াব হাবিবউল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ১০০৬ নং টিচার্স রুমে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খন্ডকালীন প্রভাষক মিরাজ তার সিনিয়র “সহকারী অধ্যাপক” রফিক লিখনকে অপমান অপদস্ত ও মারধর করে। সুত্রে জানা যায়, এসময় তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সবুজ তাকে গালাগালি ও দেখে নিবে বলে হুমকি দেয় ।সহকারী অধ্যাপক রফিক লিখনকে মারধর ও নাজেহালের ঘটনায় নওয়াব হাবিবউল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
স্কুল ও কলেজ শাখার শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,গত ৫ই অক্টোবর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ও তাদের কয়েক জন দোসর এখনো কলেজে বহাল রয়েছে।তারা বিভিন্ন ভাবে শিক্ষাকদেরকে নাজেহাল করা শুরু করছে। তাদের সার্টিফিকেট জাল জালিয়াতির গোমর ফাঁস হওয়ার ভয়ে বিভিন্ন অজুহাতে স্থায়ীও বৈধ শিক্ষদের স্কুল থেকে তারানোর পরিকল্পনা করছে। তাদের অত্যাচারে শিক্ষক সমাজ আতংকিত।টিচার্স রুমে মারামারির বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক রফিক লিখন বলেন, বৃহস্পতিবার তিনি স্কুল বন্ধুদের সাথে সখিপুর গিয়েছিলেন। তিনি রবিবার সকাল ৯ টার সময় কলেজের সমম্বয়ক কমিটির বিষয়ে জানতে ইংরেজি প্রভাষক হারুনুর রশিদের সাথে কথা বলতে রুমে গেলে খণ্ডকালীন প্রভাষক মিরাজ তাকে উল্টো পাল্টা কথা ও গালাগালি শুরু করেন। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায় উত্তেজিত হয়ে মিরাজ তাকে চেয়ার দিয়ে মারতে আসে এবং তার গায়ে ধাক্কা দেয়। এবিষয়ে জানার জন্য মিরাজকে তার মুঠোফোনে বার বার ফোন করে ও পাওয়া যায় নি।ক্লাস চলাকালীন সময়ে টিচার্স রুমে মারামারির বিষয়ে জানতে চাইলে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মির্জা মাহমুদা বলেন, এসময় তিনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন না। অফিসিয়াল কাজে তিনি শিক্ষা বোর্ডে গিয়েছিলেন,অফিসিয়াল কাজ শেষে তিনি বাসায় চলে যান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মারামারির বিষয়ে তাকে কেউ কিছু বলেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com