সিটিজেননিউজ ডেস্ক : লেবাননের পূর্বাঞ্চলীয় বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় মঙ্গলবার অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা। অন্যদিকে হামলায় ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান ‘বেকা অঞ্চলে হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে একাধিক হামলা’ চালায়। এই লক্ষ্যগুলোর মধ্যে প্রশিক্ষণকেন্দ্রও ছিল, যেগুলো থেকে ‘ইসরায়েলি সেনা ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন’ করা হচ্ছিল।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানায়, ‘শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমানগুলো বেকা উপত্যকার উত্তরে ওয়াদি ফারা এলাকায় কয়েকটি হামলা চালায়। এর মধ্যে একটি হামলা বাস্তুচ্যুত সিরীয়দের একটি ক্যাম্পে পড়ে, যাতে ১২ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে সাতজন সিরীয়। এ ছাড়া আটজন আহত হয়েছে।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চললেও এই হামলা চালানো হলো। ইসরায়েল বলছে তারা হিজবুল্লাহর ‘রাদওয়ান ফোর্সের’ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এই রাদওয়ান ফোর্স হিজবুল্লাহর একটি অভিজাত ইউনিট।
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই হামলাকে ‘হিজবুল্লাহ ও লেবানন সরকারের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তার দাবি, ‘লেবানন সরকার এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য দায়ী। আমরা প্রতিটি সন্ত্রাসীকে আঘাত করব এবং ইসরায়েল ও উত্তরাঞ্চলীয় বাসিন্দাদের প্রতি যেকোনো হুমকি প্রতিহত করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘হিজবুল্লাহ তাদের সামর্থ্য পুনর্গঠনের চেষ্টা করলে আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাব।’
সেনাবাহিনী আরো জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে রাদওয়ান ফোর্সের কমান্ডারদের হত্যার পর থেকে ইউনিটটি পুনর্গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার যেসব স্থানে হামলা হয়েছে, সেসব জায়গায় অস্ত্র মজুদ ও অন্যান্য কার্যক্রম চলছিল।
এগুলো ‘ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে হওয়া সমঝোতার সরাসরি লঙ্ঘন ও ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য হুমকি’।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের লিতানি নদীর উত্তরে ৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকায় সরে যাওয়ার কথা ছিল, যেখানে কেবল লেবানিজ সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা বাহিনী অবস্থান করবে। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলেরও লেবানন থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল। তবে তারা এখনো পাঁচটি ‘কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ এলাকা দখলে রেখেছে।