নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতা চাইলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
শুক্রবার কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ১২তম কমনওয়েলথ মহিলাবিষয়ক মন্ত্রীদের সম্মেলনে একটি সেশনে বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ সহযোগিতা চান।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশ নারী ও শিশু। কমনওয়েলথ নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোসহ তাদের জীবন ও মানোন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এক মিলিয়নের বেশি (প্রায় ১১ লাখ) মানুষকে বিপর্যয়ের মুখে রেখে কমনওয়েলথভুক্ত দেশে এসডিজির ৫ নম্বর গোলের প্রকৃত অর্জন সম্ভব হবে না।
গতকাল কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তার পক্ষে কেনিয়ার পাবলিক সার্ভিস, যুব ও জেন্ডারবিষয়ক মন্ত্রী প্রফেসর মার্গারেট কবিয়া এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ১২তম এ সম্মেলনের আয়োজক দেশ কেনিয়া।
সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন ইন্দিরা বলেন, বাংলাদেশ সরকার সংবিধানের আলোকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি- ২০১১, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার- ২০১৮, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ২০৩০ ও ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করছে। বাংলাদেশে ২০০৬ সালে ১৮ বছরের নিচে মেয়ে শিশুর বাল্য বিয়ের হার ছিল ৭৪ শতাংশ তা ২০১৭ সালে কমে ৪৭ শতাংশ হয়েছে এবং ১৫ বছরের নিচে মেয়ে শিশুর বাল্য বিয়ের হার ৩২ শতাংশ থেকে কমে ২০১৭ সালে ১০.৭ শতাংশ নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০৪১ সালে বাল্য বিয়ের হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে জেন্ডার রেসপন্সিভ বাজেট প্রণয়ন করছে। বর্তমানে ৪৩টি মন্ত্রণালয় এ বাজেট করছে যা মোট বাজেটের ৩১ শতাংশ। সরকার সারাদেশে প্রায় সাত হাজারটি কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করছে। নারী শিক্ষার বিস্তার ও নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বাংলাদেশ বিশ্বের বিকাশমান দেশগুলোর একটি।
তিনি আরও বলেন, সরকার নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ২০১৮ থেকে ২০৩০ সাল মেয়াদে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সহিংসতার স্বীকার নারী ও শিশুদের জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল স্থাপন করা হয়েছে। গর্ভবতী মা ও শিশুদের পুষ্টির জন্য মা ও শিশু সহায়তা নামে দেশব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
সম্মেলনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার সিনিয়র অফিসিয়ালদের অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কমনওয়েলথ উইমেন বিজনেস ফোরাম, আইন পর্যালোচনা কমিটিসহ বিভিন্ন সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ১৭ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী কমনওয়েলথ মহিলাবিষয়ক মন্ত্রীদের সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে বাংলাদেশসহ কমনওয়েলথভুক্ত ৫৩ টি সদস্য রাষ্ট্রের সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।