জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, দলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা যেন উদ্ধারকর্মীর মতো প্রস্তুত থাকে। ঝড় আঘাত হানার পূর্বেই উপকূলীয় অসহায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীসহ উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপি এই নেতা বলেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা নিয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হচ্ছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের উপকূল থেকে ‘ফণী’র দূরত্ব ধীরে ধীরে কমে আসছে। অতি প্রলয়ঙ্কারী ফণি’র আকার বাংলাদেশের আয়তনের চেয়েও বড়, আবহাওয়াবিদরা বলছেন- উপকূলে উঠে আসার সময় ফণীর গতি হতে পারে ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটারের বেশি। বাংলাদেশের খুলনা ও তৎসংলগ্ন উপকূলের দিকে ধাবিত ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রতিনিয়ত শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আশঙ্কা মুক্ত নয়, বরং বিপজ্জনক চেহারা নিয়ে ফণী বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এভাবে যদি উপকূলের দিকে ফণি ধেয়ে আসে তবে তার বিষাক্ত ফণায় অকল্পনীয় তাণ্ডবলীলা চালাবে। যা ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়কাণ্ডের চেয়ে ভয়াবহ হতে পারে।
তিনি জানান, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বার্তায় বলা হচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে গত ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ‘ফণী’ সবচেয়ে শক্তিশালী আর ধ্বংসাত্মক। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের ঘোরতর আশঙ্কা, উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়ার পরই ফণি বাঁক নিয়ে সাতক্ষীরা ও সুন্দরবন অঞ্চলের ওপর আঘাত হানবে ‘আইলা’র চাইতে ভয়াল রুপ নিয়ে।
রিজভী বলেন, এক প্রলয়ঙ্ককারী দুর্যোগের আলামত সুস্পষ্ট হলেও সরকার তা মোকাবিলা করতে কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। তাই এই মুহূর্তে সকলকে পূর্ণ সতর্ক হতে হবে। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে। সমগ্র উপকূল অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমান, তেল রিজার্ভার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র- এসব নিরাপদ করার এখনি সময়।
তিনি বলেন, যেকোনো বড় দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলায় ‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল’ আছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। উনি মিটিং না করেই বিদেশ চলে গেলেন। কোনো আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা নেই। উপকূলীয় জেলা পর্যায়ে জরুরি সভা নেই। তিন বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমুহ, গোয়েন্দা সংস্থা, কোস্টগার্ড, আনসার এদের নিয়ে কোনো সভা করা হয়নি। উদ্ধার কাজে কোনো প্রস্তুতিই গ্রহণ করা হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, উদ্ধারকর্মী, উদ্ধারযান, খাবার, পানি এসবের কোনো প্রস্তুতিই দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সফলতার সাথে সরকার পরিচালনা করেছে। কিন্তু বিপদ দেখলে পালিয়ে যায়নি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৪ বার প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিয়ে দেশসেবা করেছেন। পুরো শাসন পিরিয়ডে জাতীয় দুর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তৎপর থাকতেন। মিটিংয়ের পর মিটিং, নির্দেশনা, এমনকি রাতভর সজাগও থেকে উদ্ধারকর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মনিটরিং করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহ দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।