সিটিজেন ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আগে হাওর এলাকায় কোনও সুযোগ-সুবিধা ছিল না। এখন সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে, অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কাজেই হাওরবাসীকে এলাকায় থেকে সেবা দিতে হবে। দায়িত্বে অবহেলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার থেকে এমপিরা পর্যন্ত এলাকায় থাকেন না, তারা জেলা শহর কিংবা রাজধানীতে থাকেন। এলাকার মানুষ প্রয়োজনে জনপ্রতিনধিদের পাশে পান না। এভাবে চলতে পারে না। যারা এলাকায় থাকতে পারেন না, তাদের ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি না হওয়াই উচিত।’
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সাত দিনের কিশোরগঞ্জ সফরের পঞ্চম দিন রবিবার (১৩ অক্টোবর) হাওর উপজেলা ইটনা সফর করেন। সেখানে বিকালে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ মাঠে ইটনা নাগরিক কমিটি সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘এক সময়ের অবহেলিত হাওর আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। আমি দিনরাত হাওরের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এ উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে যোগ্য লোক দরকার। শিক্ষা ছাড়া যোগ্য ও মেধাবী প্রজন্ম সম্ভব নয়। আমি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও করেছি। কিন্তু, মানসম্পন্ন শিক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। সেদিকে সবাইকে নজর দিতে হবে। হাওরের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। হাওরকে আমি শহরের মতো সাজাতে চাই।’
আবদুল হামিদ হাওর এলাকা নিয়ে তার স্বপ্ন ও পরিকল্পনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘এখানে সবগুলো উপজেলায় রেসিডেনসিয়াল স্কুল, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, মাছ গবেষণা ইনস্টিটিউট, ফ্লাইওভার করে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। এজন্য সহযোগিতা প্রয়োজন। হাওর যেন দেশের উন্নতিতে জোরালো ভূমিকা রাখাতে পারে, সেই হাওরের স্বপ্ন আমি দেখি।’
এর আগে রাষ্ট্রপতি বাদলা ইউনিয়নে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সেতু ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজের রাশিদা খানম ছাত্রী নিবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সুধী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আজিজুল হক, ইটনা উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান, ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ইসলাম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য বজলুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুক ও রায়টুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়সাল কবির।
অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ ও ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিজা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি আরেক হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম সফরে যাবেন। সেখানে একটি সুধী সমাবেশে ভাষণ দেবেন ও বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ঘুরে দেখবেন।