নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সব-সময় থাকে না। তাই এখন থেকে বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র (সাইক্লোন শেল্টার) নির্মাণ করা হবে। এর প্রধান ব্যবহার হবে স্কুলের পাঠদান হিসেবে। অন্য ব্যবহারও থাকবে। ভবনগুলো সেভাবেই নির্মাণ করা হবে। পুরনো কিছু সাইক্লোন শেল্টার সংস্কারও করা হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বর্তমান সরকারের ১৭তম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের বহুমুখী ব্যবহারের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় রাস্তা থেকে দূরে। সেখানে যাওয়ার মতো সড়ক থাকে না। সেসব সেন্টারে যাওয়ার জন্য রাস্তা দিতে হবে। এগুলোতে টয়লেটের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা ছিল না। তাই পর্যাপ্তসংখ্যক আধুনিক টয়লেট নির্মাণের নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এম এ মান্নান আরও জানান, এসব জায়গায় পানির ব্যবস্থাও করতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানি অনেক জায়গায় পাওয়া যায় না। সেসব জায়গায় বৃষ্টির পানি সংগ্রহে স্থায়ী রিজার্ভার গড়ে দিতে হবে। সাইক্লোন শেল্টার একটা মাল্টিপারপাস স্টোররুম করতে হবে। স্কুল চলার সময় বই-খাতা রাখতে হবে, দুর্যোগ হলে খাবারসহ বিভিন্ন কিছু রাখা যাবে সেখানে। স্লাইকোন শেল্টারের নকশায় স্টোররুম ছিল না, তা যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের চ্যান্সারি কমপ্লেক্সগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রবেশের ফ্রি এক্সেস রাখতে হবে। তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক বসার জায়গা, টয়লেট, পানির সুব্যবস্থা রাখতে হবে। যেন সাময়িক প্রয়োজনে প্রবাসীরা সেখানে অপেক্ষা করতে পারে বলেও নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর।
সময় অপচয় দুর্নীতির চেয়ে বড় অপরাধ বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির টাকার পরিমাণে ধরা যায়। কিন্তু অপচয়ের ফলে ক্ষতি কতটুকু হতে পারে, তা নির্ধারণ করা যায় না। সময়ের অপচয় আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যয়। এটা যদি কেউ গাফিলতি করে নিজের ইচ্ছায় করে, এটা দুর্নীতির চেয়ে ভয়ঙ্কর।’
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বিভিন্ন পয়েন্টে দেরি হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ে যায়, জনপ্রশাসনে যায়– এরকম নানা জায়গায় যায়। এতে সময় অনেক ব্যয় হয়। এ সময় ব্যয় কমিয়ে আনার রাস্তা বের করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রায় ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর বাইরেও একটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ প্রকল্পগুলোর বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ওসব নির্দেশনা দেন।