মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

আরও এক চিহ্নিত করা বাংলাদেশীর মৃত্যু আসামের বন্দিশিবিরে

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২৮০ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে বন্দিশিবিরে আরও একজন মারা গেছেন। তাকে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মৃতের পরিবার বলছে, তাকে যখন বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তখন মৃতদেহ তারা নেবেন না।

ফালু দাস নামের ৭২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি গ্রেফতার করে গোয়ালপাড়ার বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়েছিল।

দিন-কয়েক আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সেখানেই মারা যান তিনি।

নলবাড়ি জেলার প্রত্যন্ত এলাকা সুতিমারি গ্রামে তার ছেলে-মেয়ের কাছে খবর পাঠানো হলে তারা মরদেহ নিতে অস্বীকার করেন।

ফালু দাসের বড় ছেলে ভগবান দাস বলছিলেন, ‘বাবাকে যেহেতু বাংলাদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, তাহলে দেহ নিয়ে এসে কী করব? বাংলাদেশেই যাক দেহ।’

যেহেতু ফালু দাসকে ট্রাইব্যুনাল ‘বিদেশি’ বলে ঘোষণা করেছিল, তাই নিয়ম অনুযায়ী তার ছেলে-মেয়েদের কারও নামই নাগরিকপঞ্জিতে ওঠেনি।
প্রশাসনের কাছে পরিবারটির দাবি – যতক্ষণ না তাদের সবার নাম এনআরসিতে তোলা হচ্ছে এবং ভারতীয় বলে ঘোষণা না করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা বাবার মৃতদেহ আনবেন না।

তাদের দাবি ১৯৫১ সালের প্রথম নাগরিক পঞ্জিতে তার বাবার নাম ছিল। এ ছাড়া তারা যে ভারতীয় , সেই তথ্য প্রমাণ হিসেবে ১৯৭১ সালের আগের অনেক নথিই তারা জমা দিয়েছিলেন।

শনিবার ওই পরিবারের কাছে গিয়েছিল বাঙালি নেতাদের একটি দল। তাদের মধ্যেই ছিলেন সারা আসাম বাঙালি ছাত্র যুব ফেডারেশনের বাকসা জেলার নেতা মদন সাহা।

তিনি বলছিলেন, ‘ফালু দাসের বাবার নাম ছিল ভুলু রাজবংশী। অনেকের মতোই পদবি বদল করেছিলেন ফালু দাস। সেখানেই সমস্যাটা হয়েছে। যদিও ১৯৫১ সালের প্রথম এনআরসি বা ৬৬ সালের ভোটার লিস্টের সার্টিফায়েড কপি সবই দেখলাম আমরা। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে সেগুলো গ্রাহ্য করেনি। সেজন্যই বন্দিশিবিরে এভাবে মারা যেতে হলো তাকে।’

প্রশাসন চেষ্টা করছে পরিবারটিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে মরদহদেহ নিতে রাজি করাতে। নলবাড়ি জেলার ডেপুটি কমিশনার ভরত ভূষণ দেব চৌধুরী বলছিলেন, ‘পরিবারটির সঙ্গে কথা বলতে তিনি নিজে দুবার গিয়েছিলেন।’

দেব চৌধুরীর কথায়, ‘তারা তিনটি দাবি করেছে – সরকারকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে পরিবারের প্রত্যেকের নাম এনআরসিতে তুলে দেয়া হবে। দ্বিতীয়ত, পরিবারের কাউকে বিদেশি বলে আটক করা হবে না আর তৃতীয়ত কিছু আর্থিক সাহায্যের কথা জানিয়েছে।’

‘সমস্যা হলো এনআরসিতে নাম তোলা বা বাদ দেয়ার অধিকার প্রশাসনের নেই। এটি সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে হয়েছে আর এনআরসিতে নাম না থাকা কাউকে যে এখনই গ্রেফতার করা হবে না সেই আশ্বাস তো আগেই দেয়া হয়েছে। কিন্তু এগুলো তো লিখিতভাবে আমরা দিতে পারি না। তবে আর্থিক সাহায্য করা যেতেই পারে, ‘ বলছিলেন দেব চৌধুরী।

এর আগে শোনিতপুর জেলার বাসিন্দা দুলাল পাল নামের এক ব্যক্তিও একইভাবে বিদেশি বলে চিহ্নিত হয়ে বন্দি থাকাকালীন মারা যান।

তার পরিবারও বলেছিল তাকে যেহেতু বাংলাদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তাই মৃতদেহও সেদেশেই পাঠিয়ে দেয়া হোক।

মৃত্যুর দশদিন পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে অবশ্য পালের মরদেহদেহ নিয়ে সৎকার করে ওই পরিবার।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com