ক্রীড়া প্রতিবেদক: ‘আচ্ছা, ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশের লক্ষ্য কি? এমনিতেই ভারত প্রবল শক্তিশালী। তার ওপর নিজের মাটিতে খেলা। আর দলে নেই দুই প্রধান চালিকাশক্তি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবাল। এরকম ক্ষয়িষ্ণু শক্তির এক দল নিয়ে ভারতের মাটিতে ভারতীয়দের সাথে কতটা কুলিয়ে উঠতে পারবে টাইগাররা?’ সে প্রশ্ন উকিঝুকি দিচ্ছে ভক্ত ও সমর্থকদের মনে।
কিন্তু ভারত সফর নিয়ে টাইগারদের লক্ষ্য-পরিকল্পনার কথা এখনো অজানাই থেকে গেছে। ভক্ত, সমর্থক, দেশবাসী আর ক্রিকেট বিশ্বের কেউ জানেন না আসলে ভারত সফরে বাংলাদেশ দল কি করতে চায়? তাদের ভাবনা কি? লক্ষ্য-পরিকল্পনাটাই বা কেমন?
কি করে জানা হবে? সাধারণত কোন বিদেশ সফর, সিরিজ বা টুর্নামেন্ট খেলতে বিদেশ যাবার আগে প্রেস কনফারেন্সেই কথা বলে যান অধিনায়ক, কোচ-ম্যানেজাররা। এবার আর তা হলো কই? গতকাল মঙ্গলবার অনেক রাত পর্যন্ত তো সাকিবকে নিয়েই ব্যস্ত সবাই।
আর টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নির্বাচন, ঘোষণাই হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে। তাই আর ঘটা করে প্রেস কনফারেন্স করা সম্ভব হয়নি।
আজ বুধবার বেলা ৩টায় ফ্লাইট, তাই বুধবার সকালেও আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত প্রস্তুতির জন্যই তা সম্ভব নয়। তবে ধারণা করা যাচ্ছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে হয়তো হযরত শাহজালাল অঅন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টেস্টের নতুন অধিনায়ক মুমিনুল হক আর টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো আর স্পিন কোচ হিসেবে সবে দায়িত্ব নেয়া ড্যানিয়েল ভেট্টোরি কথা বলতে পারেন। কেবল তখনই জানা যাবে, এ সিরিজ নিয়ে টাইগারদের এবং টিম ম্যানেজমেন্ট ও কোচদের ভাবনা কি?
এদিকে আজ বুধবার বেলা ৩টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে সরাসরি দিল্লি যাবে বাংলাদেশ দল। কোচিং স্টাফ, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামের সাথে এ সফরে দলের ম্যানেজার হয়ে যাচ্ছেন ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি ম্যানেজার সাব্বির রহমান শাফিন।
এমনিতেই টি-টোয়েন্টি আর টেস্ট-দুই ফরম্যাটেই ভারত অনেক বেশি শক্তিশালী। ব্যাটিং, বোলিং আর ফিল্ডিং-তিন শাখায় ভারতীয়দের রয়েছে এক ঝাঁক মেধাবী পারফরমার। যাদের মেধা, প্রজ্ঞা আর পারফরমেন্সের সাথে কুলিয়ে উঠতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে যায় যে কোন দলের ক্রিকেটারদের।
সেখানে ভারতের মাটিতে প্রথম পূর্ণাঙ্গ সফর, তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি আর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ-আর তাতে নেই দুই প্রধান পারফরমার ও মূল চালিকাশক্তি সাকিব আর তামিম।
টেস্টে তামিম ইকবাল সন্দেহাতীতভাবেই দেশের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। আর অধিনায়ক সাকিব দলের প্রাণশক্তি, ব্যাট ও বল হাতে যিনি প্রধান নির্ভরতা আর সবচেয়ে কার্যকর বোলিং অস্ত্র।
ভারতীয়দের বিপক্ষে টাইগাররা টি-টোয়েন্টি আর টেস্টে অবশ্যই ‘আন্ডারডগ।’ সেখানে সাকিবের মত বিশ্বমানের অলরাউন্ডার আর তামিম ইকবালের মত নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ছাড়া টাইগাররা কতটা কুলিয়ে উঠতে পারবে? সেটা সময়ই বলে দেবে।
এদিকে ভারতে গিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করার তেমন পর্যাপ্ত সুযোগ পাবেন না মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, সৌম্য-লিটনরা। হাতে সময় নেই একদমই। আজ দিল্লি গিয়ে (৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর) মোটে তিন দিন প্রস্তুতির সময় পাবে টাইগাররা।
৩ নভেম্বর দিল্লিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তারপরের রুটিন ও ট্যুর সিডিউল প্রায় বিশ্বকাপের মতো। এক শহর থেকে আরেক শহরে ছুটতে হবে । এবং এক ম্যাচ থেকে আরেক ম্যাচের মাঝে যা বিরতি আছে, তার বড় অংশ কেটে যাবে ভ্রমণেই। সবগুলো বিমান ভ্রমণের ভেন্যু। কাজেই ম্যাচের ফাঁকে নিজেদের প্রস্তুত করা বহুদূরে, বিশ্রামের অবকাশও মিলবে কম।
৭ নভেম্বর দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি রাজকোটে। ১০ নভেম্বর তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নাগপুরে। সেখান থেকে টেস্ট খেলতে জাতীয় দল যাবে ইন্দোরে। সেখানে ১৪ নভেম্বর শুরু হবে প্রথম টেস্ট। আর ২২ নভেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু কলকাতার ইডেন গার্ডেনে।