ক্রীড়া প্রতিবেদক: বয়সকে মানদণ্ড ধরলে মাশরাফি বিন মর্তুজা ছাড়া এ মুহূর্তে টিম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে বয়সে সবার বড় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জাতীয় দলের অন্যতম সিনিয়র সদস্যও। বয়স ৩৩ বছর ২৬৮ দিন।
২০০৭ সালের জুলাই থেকে ওয়ানডে ফরম্যাট দিয়ে যাত্রা শুরু জাতীয় দলে। তার অল্প কিছুদিন আগে ক্যারিয়ার শুরু করা সাকিব-মুশফিক পুরোদস্তুর অধিনায়ক হয়ে গেলেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিন্তু এখনো পুরোপুরি অধিনায়ক হতে পারেননি।
তবে গত এক বছরের বেশি সময়ে বেশ কয়েকবার দল পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে সেটা কারো না কারো অনুপস্থিতিতে। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে।
টেস্ট ফরম্যাটে গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ও চলতি বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে দল পরিচালনার রেকর্ড আছে রিয়াদের। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ও নিদাহাস ট্রফির তিনটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি।
এ সব ম্যাচের মধ্যে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি জয় ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ড্র’ই মাহমুদউল্লাহর সাফল্য। পরাজয় মিলেছে বাকি সব ম্যাচে। আর টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক রিয়াদের সাফল্য বলতে শুধুমাত্র নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়।
সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ক্যাপ্টেন রিয়াদ। তবে এবারের মিশনটি অনেক কারণে কঠিন। প্রথমতঃ খেলা ভারতের মাটিতে। প্রতিপক্ষ ভারত- এই ফরম্যাটে বিশ্বসেরা। আর তার দলে নেই দুই প্রধান চালিকাশক্তি তামিম আর সাকিব। যার প্রথমজন ব্যাটিং স্তম্ভ। আর সাকিব তো একাই ‘থ্রি ইন ওয়ান।’
এখন এমন এক অবস্থায় ভারতের সাথে ৩ (দিল্লিতে), ৭ (রাজকোট) ও ১০ নভেম্বরে (নাগপুরে) ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। কি করবে টাইগাররা? কতটা কুলিয়ে উঠতে পারবে ভারতের সাথে? ভক্ত ও সমর্থকরা এ নিয়ে রীতিমত চিন্তিত।
তবে যার নেতৃত্বে ওই তিন ম্যাচের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ, সেই দলের অধিনায়ক রিয়াদ কিন্তু ভীত নন। অধিনায়ক কিভাবে আসলো? কার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পেলেন? সেটাও তার কাছে খুব বড় বিষয় নয়।
তিনি মনে করেন, যেভাবেই আসুক। দল পরিচালনার দায়িত্ব বর্তেছে তার কাঁধে। এখন সে দায়িত্ব পালনে সর্বাত্মক চেষ্টাও করতে হবে। কে আছে, আর কে নেই? তা নিয়ে ভাবার চেয়ে দায়িত্ববোধই তাকে বেশি টানছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো রিয়াদের অনুভব-উপলব্ধি, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামাই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
আজ দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার আগে দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে অনেক কথার ভিড়ে রিয়াদ বলে দেন, ‘দায়িত্বটা আমার কাছে এসেছে। আমি চেষ্টা করবো দায়িত্বটা পালন করতে। আর প্রভাবের কথা যদি বলেন, তাহলো বলবো বাংলাদেশের জার্সি গায়ে যখন মাঠে নামি তখন সেটাই সবথেকে বড় অনুপ্রেরণা।’
ভারতের বিপক্ষে সিরিজ সহজ হবে না মোটেই। টিম ইন্ডিয়া অনেক শক্তিশালী। পরিণত ও দক্ষ। প্রতিপক্ষ হিসেবে খুবই কঠিন। তাই রিয়াদও মানছেন, ভারতকে হারানো শক্ত। তার ভাষায়, ‘কঠিন কাজ অবশ্যই৷ তবে অসম্ভব কিছু না।’
রিয়াদ আরো বলেন, ‘আগে দল হিসেবে পারফরম করতে হবে এবং ভাল খেলতে হবে। আমাদের দল হিসেবে ভালো করতে হবে। নিজেদের ভুল ত্রুটি কমিয়ে হাফ চান্সগুলোকে ফুলচান্স করতে। ছোট ছোট সুযোগগুলো নিতে হবে। সেগুলোর শতভাগ ব্যবহার করতে হবে। তাহলে ভালো কিছু পাওয়া সম্ভব। আমরা ম্যাচও জিততে পারব।’
সাকিব ও তামিম নেই। এটা কড় ধরনের মাইনাস পয়েন্ট। এতে করে শক্তি কমেছে অনেকটাই। তা মাথায় আছে। তবে তা নিয়ে হা-পিত্যেশ করার চেয়ে যা আছে এবং যারা খেলবে তাদের নিয়ে কিভাবে ভাল খেলা যায়, তাদের কাছ সেরাটা বের করা যায়- তা নিয়ে মানতেই বেশি উৎসাহী রিয়াদ।
আমরা কোন দল যাচ্ছি বা কে অধিনায়ক হচ্ছে, সেটা আমাদের হাতে নেই। আমাদের কাজ হচ্ছে খেলা এবং দেশের জন্য জান দিয়ে খেলা। আমরা সেটা করার চেষ্টা করবো এবং আই হোপ সবাই এই মোটিভেশন নিব।’