জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক দেশে প্রতিবন্ধীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাতে করে তারা নিজেদের জীবন নিজেরাই চালিয়ে নিতে পারে। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এ জাতীয় প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে… আমরা যদি কিছুটা উদ্যোগ নিতে পারি তবে তাদের অনেক ক্ষেত্রে অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার দরকার পড়বে না । প্রতিবন্ধীদের জন্য দেশের প্রতিটি উপজেলায় প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হবে ।
২৮তম আন্তর্জাতিক ও ২১তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবন’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলার ৩৯টি উপজেলায় মোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্র চালু রয়েছে। সেখানে একটি করে অটিজম কর্ণারও রয়েছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় এমন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাবলম্বী করার জন্য দেশে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
সকল প্রকার প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রতিটি উপজেলায় প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও ক্রীড়া সুবিধা এবং চাকরির ব্যবস্থা করবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা সমগ্র বাংলাদেশ থানা পর্যায়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনেকগুলো জায়গা দিয়ে গেছেন। যে জায়গাগুলো অনেক জায়গা প্রোথিত রয়েছে কিছু জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নিজস্ব জমি খুঁজে বের করে এ ধরনের প্রকল্প নেয়ার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করে আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছেন। সে সংবিধানে তিনি প্রতিবন্ধীদের অধিকারের কথা উল্লেখ করেছেন। সংবিধানে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা স্পষ্ট লেখা আছে। বঙ্গবন্ধু প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করার যে পদক্ষেপ নিয়ে গেছেন তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত উন্নয়নের মূলনীতি অনুযায়ী কেউ পেছনে থাকবে না, সকলে সমানতালে এগিয়ে যাবে। সকল প্রতিবন্ধীকে সুরক্ষা এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অটিজম এবং প্রতিবন্ধী হিসেবে আমাদের দেশে কোনো সচেতনতা এর আগে ছিল না। সায়মা ওয়াজেদ অত্যন্ত পরিশ্রম করে দেশ-বিদেশে অটিজম এবং প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সারা পৃথিবীতে তিনি অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।
‘এখন অটিজম এবং প্রতিবন্ধী সম্পর্কে মানুষ যথেষ্ট সচেতন। প্রতিবন্ধী অসুস্থতা বা এবং কোনো রোগ নয়। জন্মগতভাবে দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে প্রতিবন্ধী এবং অটিজম হয়। আগে পোলিও হলে অনেকেই প্রতিবন্ধী হতো। বাংলাদেশ পোলিওমুক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা পোলিও ভ্যাকসিন দিয়ে পোলিওমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।’
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধীদের পক্ষে ফেরসৌসী আক্তার, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের প্রেসিডেন্ট সাইদুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধিতা থেকে উত্তরণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল এবং অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন-সংস্থা ও পিতা-মাতাকে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।