নিজস্ব প্রতিবেদক: এসএ টেলিভিশনের চাকরিচ্যুত ১৮ সাংবাদিককে বহাল এবং বেতন ও ইনক্রিমেন্ট নিয়মিত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করছেন টেলিভিশনটিতে কর্মরত সাংবাদিক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংবাদিকরা।
সম্প্রতি এসএ টেলিভিশনের আটজন প্রতিবেদক এবং প্রোগ্রাম সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের তিন মাসের বেতন আটকা রয়েছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, চাকরিচ্যুত মোট ১৮ জনকে পুনর্বহাল করতে হবে। সেইসঙ্গে বেতন ও ইনক্রিমেন্ট নিয়মিত করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলেও জানান তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় তারা তাদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। ওইদিন তারা দুই ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন। এরপর আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে অবস্থান শুরু করেছেন। সেইসঙ্গে এসএ টিভি কার্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
এসএ টিভির ‘খোঁজ’র উপস্থাপক ও জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক বাতেন বিপ্লব বলেন, ‘তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হীন উদ্দেশ্যের সঙ্গে আমাদের থাকতে বলেছে। কিন্তু আমরা অনেকেই তাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছি, কেন আমরা এ রকম অনৈতিক কাজ করতে যাব? তখনই আমাদের চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে আপস করতে পারিনি বলেই আমাদের ১৮ জনকে ছাঁটাই করেছে। এ জন্য মালিকপক্ষকে আমি ধিক্কার জানাই।’
তিনি বলেন, ‘এই ছাঁটাইকে তারা বলছেন- এটা খুবই সামান্য ব্যাপার। সাত বছর কাজ করার সময় ন্যূনতম ইনক্রিমেন্ট না পেয়ে যারা কোনো রকমে দিনাতিপাত করছিল, তাদের যখন ছাঁটাই করা হলো, তাদের জন্য সেটা কতটা অমানবিক, তা হাজার হাজার কোটি টাকার এই মালিকের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।’
দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর এসএ টিভিতে চাকরির পর ছাঁটাই হন প্রডাকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট শ্যামা। তিনি বলেন, ‘চাকরিচ্যুত হওয়ার দিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমরা কাজ করছিলাম। আমাদের হুট করে অ্যাডমিন থেকে বলা হয়, জরুরি তলব। আমাদের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দেয়া হলো। হতভম্ব হয়ে যাই সেই চাকরিচ্যুতির কাগজ দেখে। একসঙ্গে ১০ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। কোনো কারণ ছাড়াই অব্যাহতি দেয়া হয়। জীবনটা এখানে এসে দাঁড়াবে, সেটা কখনই ভাবিনি।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘কম বেতন নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা এই এসএ টিভি গড়ে তুলেছেন। আজ তাদের যেখান ক্যামেরা নিয়ে দৌড়ানোর কথা, প্রতিবেদকদের ইন্টারভিউ করার কথা, সেখানে আজ তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের সামনে বসে আন্দোলন করছেন। এর চেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা আর হতে পারে না। এসএ টিভির মাহমুদ আল ফয়সালের মতো লোকেরা, যারা আমাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, তাদের জন্য লজ্জা।’
যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের চাকরিতে বহাল করতে হবে। নাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও জানান মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল।
এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।