নওগাঁ প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে, হারিয়েছিলেন নিজেদের সম্ভ্রম। কিন্তু সেই ত্যাগের বিনিময়ে কোনও সংবর্ধনা তো দূরের কথা, স্বীকৃতি পেতেই তাদের লেগে গেছে ৪৮ বছর। অবশেষে তাদের সেই অপেক্ষাও শেষ হলো। ৪৮ তম মহান বিজয় দিবসে জীবনের প্রথম সংবর্ধনা পেলেন নওগাঁর রাণীনগরের ১০ বীরঙ্গনা। সেই সঙ্গে পেলেন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা, বিজয় উৎসব ভাতা, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্রেস্ট ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে একটি করে ছাগল। একই সঙ্গে পেয়েছেন উপজেলাবাসীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাণীনগর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরঙ্গনা), যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় বীরাঙ্গনা মায়া রানী সূত্রধর, রাশমনি সূত্রধর, সন্ধ্যা রানী পাল, কালীদাসী পাল, সন্ধ্যা রানী ও গীতা রানী পালের হাতে সম্মাননা, ক্রেস্ট ও স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রয়াত বানী রানী পাল, ক্ষান্ত রানী পাল, রেনু বালা ও সুষমা সূত্রধরের পরিবারের সদস্যদের হাতেও সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়েছে।
বীরাঙ্গনা মায়া রানী সূত্রধর বলেন,‘জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পাওয়া এই সংবর্ধনায় এতো দিন কোনও কিছু না পাওয়ার আক্ষেপ কিছুটা হলেও মুছে গেছে। আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আমাদের এই সম্মননা দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা রাখি আগামীতেও আমাদের প্রতি তাদের সুদৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের সহধর্মিনী সুলতানা পারভিন বিউটি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন হেলাল, ভাইস চেয়ারম্যান জারজিস হাসান মিঠু, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ দুলু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন, রাণীনগর থানার ওসি জহুরুল হক, সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিনসহ সব মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা দফতরের সব কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।