নিজস্ব প্রতিবেদক : কহর দরিয়া খ্যাত টঙ্গীর তুরাগ তীরের ইজতেমা ময়দানে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের তিন দিনব্যাপী ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় তথা শেষপর্ব।
আজ শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ান করছেন ভারতের দিল্লীর মুফতি ওসমান। ইজতেমার এ পর্বে অংশ নিচ্ছেন মাওলানা সা’দ অনুসারি দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা।
ইজতেমার আয়োজক মুরব্বী মো. আনিস বলেন, বাদ ‘ফজর দিল্লীর মুফতি ওসমান বয়ান শুরু করেন। তার বয়ান তরজমা করেন বাংলাদেশের মুফতি আব্দুল্লাহ মুনসুরী। আজ ইজতেমা ময়দানে জু’মার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জু’মার নামাজের ইমামতি করবেন শুরা সদস্য বংলাদেশের মাওলানা মোশারফ।’
বিশ্ব ইজতেমায় সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের শুরা সদস্য ও বুজর্গরা মূল বয়ান পেশ করেন। মূল বয়ান উর্দূতে হলেও বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষাভাষী মুসল্লিদের জন্য ওই বয়ান স্ব স্ব ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় দেশের বিভিন্ন জেলার অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ৮৭ খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। তবে জেলাভিত্তিক মুসল্লিদের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে ৮৪টি খিত্তা। বাকি তিনটি খিত্তা রিজার্ভ রাখা হয়েছে। এছাড়া ময়দানের পশ্চিম-উত্তর পাশে বিদেশি মুসল্লিদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বিদেশি নিবাস।
ইতোমধ্যে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। তারা ইজতেমার শীর্ষ মুরব্বিদের বয়ান শুনছেন। মুসল্লিদের আসা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রথম পর্বের তুলনায় দ্বিতীয় পর্বে মুসল্লি সমাগম কম লক্ষ্য করা গেছে।
ভোরে টঙ্গীতে কুয়াশা থাকলেও শীতের তীব্রতা কম। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশা কেটে গিয়ে ইজতেমাস্থল ও আশপাশ এলাকায় রোদ উঠেছে।
প্রথম পর্বের মতো এ পর্বেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে। ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে কড়া নজরদারি। চেকপোষ্ট, মেটাল ডিটেক্টর, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি টিভির মাধ্যমে পুলিশ ও র্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে তা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এছাড়া সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিয়ে পর্য়বেক্ষণ করছেন।
আগত মুসল্লিদের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্যাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ময়দানের উত্তর পাশে নিউ মন্নু কটন মিলের অভ্যন্তরে মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করেছে। তারা মুসুল্লিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন।
এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৭-১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে। ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের দিন সকল ট্রেন টঙ্গী রেল জংশনে যাত্রাবিরতি দেবে।
আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্ব তথা এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
উল্লেখ্য, গত ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি একই ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ওই পর্বে মাওলানা জুবায়ের (আলমি শুরার) অনুসারীগণ অংশ নেন।