জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পূর্ব নির্ধারিত সিঙ্গাপুর সফর বাতিল করা হয়েছে। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতার জন্য সফরটি বাতিল করা হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর সফরের কথা ছিল রাষ্ট্রপতির। দেশটির মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাতের (অ্যাপয়েনমেন্ট) কথা ছিল। সফর বাতিলের কারণে অ্যাপয়েনমেন্টও বাতিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা এখন সিঙ্গাপুরে। রোববার নতুন করে আরও সাতজন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ফলে সেখানে করোনাভাইরাস আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ জনে।
এ পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সিঙ্গাপুর সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এ নিয়ে বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপও নিয়েছে দেশটির সরকার, যার মূল উদ্দেশ্য মানুষে-মানুষে যোগাযোগ যথাসম্ভব কমিয়ে দেয়া।
সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ মিশন জানিয়েছে, হোস্ট কান্ট্রির সতর্ক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের জনশক্তি নিয়োগ সংক্রান্ত কনস্যুলার কার্যক্রমে সেবা গ্রহীতাদের স্বশরীরে মিশন না গিয়ে যথাসম্ভব অনাইলনে কর্ম সম্পাদনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সিঙ্গাপুর সরকার করোনা নিয়ে এতটাই সতর্ক অবস্থানে যে, ওই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা বাংলাদেশিদের উদ্ধারে ব্যবহার করা বিমানের পাইলট, ক্রু তো বটেই, কোটি টাকা ব্যয়ে উড়াজাহাজটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও ঢাকা-সিঙ্গাপুর রুটে তা দিয়ে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হয়নি।
সিঙ্গাপুর সরকার তাদের বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটিকে গ্রহণে আপত্তি তোলার পর অন্য কোথায় এটি পাঠানো যায়নি। ফলে ওই যানকেও উহান ফেরত বাংলাদেশিদের মতো ঢাকায় কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এখন পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ড ও এর বাইরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০৩ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশেই মারা গেছেন ৭৮০ জন।
বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত প্রতিষেধকবিহীন এই ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮০০ জন। ২০ হাজারেরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি। এদের মধ্যে ১ হাজার ১৫৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।