শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::

হুমায়ুন ফরীদির মৃত্যুবাষির্কী আজ

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ১৮৮ বার পঠিত

বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের অভিনয় জগতের এক নক্ষত্রের নাম হুমায়ুন ফরীদি। মঞ্চে, ক্যামেরা এমনকি দৈনন্দিন জীবনেও যার সাবলীলতা মুগ্ধ করেছে মানুষকে। নায়ক কিংবা খলনায়ক সব চরিত্রেই সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছেন এই গুণী শিল্পী। বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে দুই হাতে মুক্তা ছড়িয়েছেন। এই নক্ষত্রের পতন হয়েছে ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। ফাগুনের দিনে তার চলে যাওয়ার বিষাদ আজও ভুলেনি মানুষ। নগরীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এই বরেণ্য শিল্পী।

নাটক, চলচ্চিত্র কিংবা মঞ্চ—সবখানেই ছিল হুমায়ুন ফরীদির অবাধ বিচরণ। ঢাকা থিয়েটারের ‘শকুন্তলা’, ‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’, ‘কীর্তনখোলা’, ‘কেরামত মঙ্গল’-এর মতো মঞ্চনাটকে অভিনয় করে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সদস্য হিসেবে গ্রাম থিয়েটারের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হিসেবে শুধু রাজধানীতে নয়, বিভিন্ন জেলার মঞ্চেও অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন।

মঞ্চের গণ্ডি পেরিয়ে টিভি নাটক আর চলচ্চিত্রেও স্বতন্ত্র অবস্থান গড়ে নেন হুমায়ুন ফরীদি। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘নীল নকশার সন্ধ্যায়’ ও ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’ নাটকে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দেন। তার অভিনীত ধারবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’ আজও দর্শকের স্মৃতির পাতায় ভেসে বেড়ায়। এতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান।

তার অভিনীত উল্লেযোগ্য নাটক হলো—‘ভাঙনের শব্দ শুনি’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘তিনি একজন’, ‘চন্দ্রগ্রস্ত’, ‘কাছের মানুষ’। তার অভিনীত সর্বশেষ নাটক ‘পূর্ণ চাঁদের অপূর্ণতায়’। সর্বশেষ ‘তখন হেমন্ত’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটক পরিচালনা করেন ফরীদি।

তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’। প্রথম বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘সন্ত্রাস’। এছাড়া উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে—‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মায়ের মর্যাদা’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’ ও ‘পালাবি কোথায়’। বাংলা চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে যোগ করেছিলেন নতুন মাত্রা। ‘সন্ত্রাস’ সিনেমায় প্রথম খল চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ‘মাতৃত্ব’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ২০০৪ সালে।

হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায়। তার বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম, মায়ের নাম বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফরীদি ছিলেন দ্বিতীয়। ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেন চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে। একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হন। কিন্তু পরের বছরই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় খাতা-কলম বাক্সবন্দি করে কাঁধে তুলে নেন রাইফেল। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে দামাল ছেলের মতো লড়াই করেন ফরীদি।

স্বাধীনতার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন ফরীদি। এখানেই তার অভিনয় প্রতিভার বিকাশ ঘটে। অর্থনীতির ছাত্র ছিলেন কিন্তু সেলিম আল দীনের কাছে নাট্যতত্ত্বে দীক্ষা নেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই সদস্যপদ পান ঢাকা থিয়েটারের। এই নাট্যদল থেকেই ছড়িয়ে পড়ে তার অভিনয়ের রঙ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com