শামীম চৌধুরী: বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকারে আঘাত করেছে ভয়ংকর করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাসের আঘাতে অনেক উন্নত দেশ ইতোমধ্যে কাবু হয়ে গেছে। বাংলাদেশে করোনার প্রভাবে কার্যতঃ পুরো দেশ লকডাউন রয়েছে। এতে শ্রমজীবি মানুষগুলো চরম অর্থকষ্টের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত কয়েকদিন অনেক ধরে শ্রমজীবি মানুষ অর্থাভাবে খেয়ে-না খেয়ে থাকার খবর আসছে। সরকারি ঘোষণা মতে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা বলবৎ থাকবে। এই পরিস্থিতিতে নিম্ন ও শ্রমজীবি মানুষের সাহায্য (প্রণোদনা) ঘোষণা করেছে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সচেতন মহল বলছেন, বাংলাদেশের একটি বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠী দিনমজুর শ্রমজীবি। তাই প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তা যথেষ্ট হবে না। তারপরও যে পরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছে তার সঠিক বন্টন হওয়া দরকারি। সঠিক বন্টনের জন্য সঠিক কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন সচেতন মহল। এদিকে সাধারণ লোকজন বলছেন, বাংলাদেশে জনগণের জন্য দেয়া সব সরকারি বরাদ্দ পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষকে দিয়ে বিতরণ করা হয়।
স্বাভাবিকভাবে অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ সরকারি কোনো বরাদ্দ সঠিক ও ন্যায়ভাবে বিতরণ করে না। কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যান-মেম্বাররা এসব বরাদ্দ বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেয়। বিষয়টি বর্তমানে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে গেছে। এই অনিয়মকে উপকারভোগীরা বাধ্য হয়ে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিয়েছে। বর্তমান ভয়াবহ করোনার এই কঠিন পরিস্থিতিতে এমন অনিয়ম চায় না ভুক্তভোগীরা। তারা চায় প্রধানমন্ত্রী নিন্ম আয় ও গরীব মানুষের জন্য যে প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছেন তা যেন যথাযথভাবে উপকারভোগীরা পায়। সে জন্য তারা কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান-মেম্বার নয়; সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর মাধ্যমে বিতরণ চায়। কেননা সেনা ও নৌবাহিনী বিতর্কমুক্ত মানবদরদী সরকারি বাহিনী। দেশের যেকোনে জরুরী মুহুর্তে তারা জনগণের পাশে দাঁড়ায়। বর্তমানেও করোনা রোধে মানুষকে ঘরে নিরলসভাবে কাজ যাচ্ছে এই দুই বাহিনী।
কক্সবাজারের পাঁচ উপজেলায় সেনাবাহিনী এবং তিন উপজেলায় নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রেক্ষাপটে তাদের মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বরাদ্দ তাদের মাধ্যমে বিতরণ করা যাবে। এই দুই বাহিনী বিতরণ করলে বরাদ্দ সঠিকভাবে উপকার ভোগীদের হাতে পৌঁছাবে। কিন্তু কাউন্সিলর অথবা চেয়ারম্যান মেম্বার দিলে তার ‘নয়ছয়’ হয়ে যাবে।
ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন,কাউন্সিলর অথবা চেয়ারম্যান মেম্বারদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দগুলো বিতরণের জন্য দিলে তার অর্ধেক প্রকৃত উপকার ভোগীরা পাবেন না কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নিজেরা অর্ধেক লোপাট করে ফেলবে। আবার যা বিতরণ করবে তাতেও দেখা যাবে তাদের স্বচ্ছল আত্মীয় ও অনুসারীদের ঘরে যাবে অসহায়দের দেয়া জরুরী বরাদ্দ। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন সিবিএনকে বলেন, ‘বরাদ্দ বিতরণ এখনো শুরু হয়নি। বরাদ্দগুলো সঠিকভাবে প্রকৃত ভুক্তভোগীদের হাতে পৌঁছাতে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রয়োজন হলে সেনা ও নৌবাহিনী দিয়ে বিতরণ করবো।’এই মহাক্রান্তি সময়ে সিলেট জেলা প্রতিনিধি বিভিন্ন মহল পরিদর্শন এবং সাধারণ জনগণের জিজ্ঞাসাবাধে যে আশান্বিত বা সাধারণ জনগণের চাওয়া পাওয়া সরকারের কাছে তা একান্ত কাম্য এবং প্রাপ্তি এবং প্রাপ্য। দেশনেত্রী শেখ হাসিনা যে বরাদ্দ দিবেন তা যেন, সেনাবাহিনী বা নৌ বাহিনীর মাধ্যমে তা বিতরণ করা হয়। কেননা এই বর্তমান পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যান, মেম্বার, কাউন্সিলদের প্রতি অনিহা প্রকাশ করেছে দিনমজুর থেকে সাধারণ জনগণ। তাই সর্বসাকুল্যে মাননীয় প্রধানমনত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন এই বিতরণ যেন সুষম বন্টন হয়।