নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকবে সারাদেশ। আগের বছরগুলোর মতো এবারও রাজধানীসহ সারাদেশের মসজিদ, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, স্থাপনায় থাকবে পুলিশি নজরদারি, চেকপোস্ট। তবে আগের বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা ভাবাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও জঙ্গিবাদ। তাই এবার এই দুই ইস্যু নিয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের আগে, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিনগুলোতে রাজধানীর নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) পুলিশের সব ইউনিট নিজেদের মতো সভা করে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে।
এবার রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে সরেজমিন দয়াগঞ্জ মোড়ে দাড়িয়ে চোখে পড়ে তল্লাশির চিত্র। একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকার রিকশাগুলোকে থামিকে যাত্রীদের নামিয়ে তল্লাশি করছিলেন। তল্লাশির সময় যাত্রীদের মানিব্যাগ, মোবাইল, ব্যাগ ইত্যাদিও হাতিয়ে দেখেন পুলিশ সদস্যরা। যাদের তল্লাশি করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই যুবক। এ ছাড়া বিভিন্ন কার্টন, ব্যাগসহ মালামালবাহী প্রতিটি রিকশা, ভ্যানগাড়ি, পিকআপ ভ্যানে তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
সরেজমিন রমনা, গুলশান, উত্তরা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, উত্তরা, আদাবর, মিরপুর, বারিধারা ও পুরান ঢাকার অন্যান্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ চোখে পড়েছে।
ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ পূর্ববর্তী, ঈদের সময় ও ঈদ পরবর্তী সময়ে রাজধানীসহ দেশবাসীর জন্য বাড়তি নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। ঈদের ছুটিতে অনেকে গ্রামে চলে যাবেন। এ কারণে রাজধানীতে অনেক বাসা-বাড়ি ফাঁকা থাকবে। এ সময় প্রতিটি থানা এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে। পাড়া- মহল্লার প্রতিটি সড়কেই পুলিশের টহল বাড়ানো হবে। এ ছুটির দিনগুলোতে অপরাধীরা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ আছে পুলিশ।
এদিকে সড়কের নিরাপত্তার পাশাপাশি রাজধানীর প্রায় সব থানার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। গেটে পরিচয় জেনে ভেতরে ঢুকানোর চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন শাহবাগ থানায় দেখা গেছে, থানার প্রধান গেটে একাধিক কনস্টেবল আগতদের নাম-পরিচয় ও থানায় আসার উদ্দেশ্য জানতে চাইছেন। এরপর তাদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের দেহ ও ব্যাগ তল্লাশি করে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে এআইজি সোহেল রানা বলেন, ‘থানায় সবসময়ই সার্বিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা থাকে। প্রতিটি থানার ডিউটি অফিসারের রুমসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে।’
অপরদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার পুলিশ সদর দফতরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করেন পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
তিনি এই ঈদে জঙ্গি ও উগ্রপন্থীদের তৎপরতা রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টাকারীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।