আদালত প্রতিবেদক : ঋণ দেওয়ার নামে জামানত সংগ্রহ ও পরবর্তীতে ঋণ না দিয়ে প্রতারণা এবং নকল স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য মজুদ ও বিক্রির দায়ে স্বদেশ করপোরেশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। চেয়ারম্যান শফিকুল কবিরকে নিয়মিত মামলা, দুই মাসের কারাদণ্ড এবং আড়াইলাখ টাকা জরিামানা; অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের জিএম সাদেকুল ইসলামকে আটক করে নিয়মিত মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখাতে বলা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় মতিঝিলের সমবায় ভবনের (মধুমিতা সিনেমা হলের বিপরীতে) অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ শাস্তি দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু।
পলাশ বসু বলেন, স্বদেশ করপোরেশনের জামানত গ্রহণ ও ঋণ দেওয়ার এখতিয়ার নেই। কিন্তু প্রতারণামূলকভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার কথা বলে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ কোটি টাকারও বেশি জামানত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ঋণ না পেয়ে গ্রহিতা যখন জামানত ফেরত চায়, সেটি না দিয়ে লেনদেন ও টাকাবিহীন একটি অ্যাকাউন্টের চেক দিতেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শফিকুল কবির।
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠান নিয়মিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আমরা প্রচুর বিজ্ঞপ্তি ও রেডি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেখতে পেয়েছি। যখন নতুন কোনো লোক আসে, তখন তাদেরকে ঋণগ্রহীতা সংগ্রহ ও তাদের কাছ থেকে জামানত আনতে বলে। সারা দেশে তাদের ২২ টি ব্রাঞ্চ আছে। তবে এম্প্লয়ি রেজিস্টার খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর যারা কাজ করছেন, তাদেরও অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায়নি। যখন নতুন কেউ আসে তখন তাকে ফিল্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস কাজ করার পর সে যখন এদের বুঝতে পারে, তখন চলে যায়।
এই প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র অনুযায়ী টাকা ডিপোজিট নেওয়া এবং লোন দেওয়ার এখতিয়ার নেই। এছাড়া করোনার সুযোগে এরা নকল হ্যান্ড সেনিটাইজার বিক্রি, নকল শিশু খাদ্য, বেভারেজ পণ্য, নকল মশার কয়েল উৎপাদন ও বিক্রি করছিল স্বদেশ করপোরেশন।
অভিযান চলাকালে বিপুল পরিমাণ ব্ল্যাংক চেক পাওয়া গেছে। এগুলো বিভিন্ন ঋণগ্রহিতার কাছ থেকে নেওয়া। ধারণা করা হচ্ছে এগুলো দিয়ে তারা অন্য কোথাও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড করতে পারে।
পলাশ বসু বলেন, স্বদেশ করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান শফিকুল কবির ও জেনারেল ম্যানেজার সাদেকুল ইসলামের বিরুদ্ধ সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়মিত প্রতারণার অভিযোগ মামলা করে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভোক্তা অধিকার আইনে শফিকুল কবিরকে দুই মাসের কারাদণ্ড, আড়াই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।