নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোকে পূর্ববর্তী পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার কথা থাকলেও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি দিয়েছে অর্থবছরের। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারি হিসাবে ক্যালেন্ডার বছর বলতে তারা জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত সময়কেই মনে করেন। সে অনুযায়ী তারা এই সময়কার আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে। আগের বছরও তারা এটাই করেছে। অপরদিকে নির্বাচন কমিশন বলেছে, জাতীয় পার্টি কোন সময়কালের হিসাব জমা দিয়েছে, সেটা আমরা এখনও দেখিনি। তবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, পূর্ববর্তী পঞ্জিকা বছরের হিসাব কমিশনকে দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার (২১ জুলাই) নির্বাচন কমিশনে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে।
জাতীয় পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, পার্টির আয় এক কোটি ৯৬ লাখ ২২ হাজার ৫৪৫ টাকা। আর ব্যয় দেখানো হয়েছে এক কোটি ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৭০ টাকা।
এর আগের অর্থবছরে জাতীয় পার্টির আয় ছিল এক কোটি ৯৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা এবং খরচ হয়েছিল এক কোটি ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের হিসাব জমা দিয়েছি। সরকারিভাবে ক্যালেন্ডার বছর বলতে আমরা জুলাই থেকে জুন সময়কালকে বুঝি।’ আগের বছরও তারা নির্বাচন কমিশনে একইভাবে হিসাব জমা দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ইসির চাহিদা ছিল পঞ্জিকা বছরের, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়কালের হিসাব, তাহলে তারা জুলাই মাসে এসে চাইবে কেন? এটা তো তারা আগেই চাইতে পারতো।’
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আব্দুল হালিম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, পূর্ববর্তী পঞ্জিকা বছরে দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ইসির কাছে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা ২০১৯ সালের নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত দলগুলোকে চিঠি দিয়েছি।’
জাতীয় পার্টির বিষয়ে জানতে চাইলে এই উপসচিব বলেন, ‘তারা প্রতিবেদনে কোন সময়ের হিসাব দিয়েছে, সেটা আমরা এখনও দেখিনি। এটা দেখলে বলতে পারবো। হিসাবে ভুলভ্রান্তি থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা চাইলে সংশোধনী দিতে পারবে।’
নির্বাচন কমিশন গত ২ জুলাই আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেয়। এতে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে, বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনের নির্ধারিত একটি ছকে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়।