হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীগুলোর পানি উপচে জেলার চারটি উপজেলার ফসলি মাঠ, গ্রামীণ সড়কসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, স্কুল, কলেজসহ বাড়িঘর, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। রাস্তা বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ।
সরেজমিন দেখা যায়, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই ও মাধবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ চারটি উপজেলার বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে হাওরাঞ্চল। এসব এলাকার অনেক রাস্তাই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। হবিগঞ্জ-সুজাতপুর সড়কেরও বিশাল অংশ পানির নিচে চলে গেছে। এছাড়াও লাখাই, বানিয়াচং এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার অনেক গ্রামীণ রাস্তা এখন পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারও মানুষ। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। করোনা মহামারির কারণে তাদের পাশে দেখা যাচ্ছে না স্বেচ্ছাসেবীদের। ফলে করোনা মহামারিতে বন্যা পরিস্থিতি মড়ার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতি বছরই চোখের সামনে সাজানো ঘরবাড়ি গিলে খায় সর্বনাশা বন্যা। বানের জলের সঙ্গে সংগ্রাম করে বাঁচতে হয় হাওরাঞ্চলের মানুষকে। অথচ তাদের দুর্ভোগ কমাতে নেই কার্যকর কোনও উদ্যোগ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত জানান, ভারতে ভারি বৃষ্টির কারণে পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জে বন্যা দেখা দিলে হবিগঞ্জের কিছু অঞ্চলেও বন্যা দেখা দেয়। তবে ইতোমধ্যে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টি না হলে বড় ধরনের কোনও ক্ষতি হবে না বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় জেলা প্রশাসন কাজ করছে। ইতোমধ্যে বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। গরিব অসহায় জেলেদের নিরাপদে মৎস্য আহরণের জন্য লাইফ জ্যাকেট বিতরণ করা হয়।