নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্ব দরবারের কাছে আরও আর্থিক ও কৌশলগত সাহায্য প্রত্যাশা করেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২৮ মে) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) সদর দফতরে এক প্যানেল আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এই সাহায্য চান।
ব্যাংককে ৭৫তম ইউএনএসকাপের বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার (২৮ মে)। তাতে পরিকল্পনামন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ইউএমএসকাপের নির্বাহী সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এর আগে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক এক প্যানেল আলোচনার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের এ মন্ত্রী।
এরপর ‘স্পেশাল বডি অন লিস্ট ডেভেলপমেন্ট, ল্যান্ডলকড ডেভেলপিং অ্যান্ড প্যাসিফিক আইসল্যান্ড ডেভেলপিং কান্ট্রিজ’ শিরোনামে বক্তব্য তুলে ধরেন।
প্যানেল আলোচনায় এম এ মান্নান বলেন, ‘বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্বের অত্যন্ত দরিদ্র দেশগুলো। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণে দরিদ্র দেশগুলোর কোনো ভূমিকাই নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশকেও ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে। প্রতি বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (জিডিপি) প্রায় ২ শতাংশ খরচ করতে হয় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায়।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, বিশ্বের অত্যন্ত দরিদ্র দেশগুলোরও প্রায় একই রকম অর্থ খরচ করতে হচ্ছে এর পেছনে।’ এ সময় জলবায়ুর এই হুমকি মোকাবেলায় আরও আর্থিক সাহায্য ও কলাকৌশলের প্রয়োজন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে জিডিপির ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ২০১৪ সালে যেখানে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, সেখানে গত বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে। ২০০৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ২৫০ শতাংশের বেশি। ২০০৬ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ, ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৪ শতাংশে।’
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী ছাড়াও রয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল কাউনাইন, ইআরডির যুগ্ম সচিব আব্দুল বাকী, ব্যাংককে নিযুক্ত ইকোনমিক কাউন্সিলর কবির আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, ইআরডির যুগ্ম সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।