নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বন্ধু ফাদার রিচার্ড উইলিয়াম টিম শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মিরপুর এগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং স্কুলের (এমএডব্লিউটিএস) পরিচালক অখিলা ডি রোজারিও এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফাদার টিমের মৃত্যুর খবর ফেসবুকে শেয়ার করে তার স্মৃতিচারণ করেছেন অনেকে। গওহার নঈম ওয়ারা লিখেছেন, ‘ফাদারকে প্রথম দেখি ভোলায় ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরে। উপকূলীয় অঞ্চলে যখন শক্তিশালী সাইক্লোন আঘাত হেনেছিল, তখন ত্রাণ বিতরণ করেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেই উদ্যোগ পরে কোর (সিওআরআর), আরও পরে ‘কারিতাস’ এ রূপ লাভ করে। সে সময় বেসরকারি উদ্যোগগুলোর মধ্যে সেটাই ছিল অন্যতম বৃহত্তম। স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে ফাদার তার লেখনির মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে মতামত দেন এবং গণহত্যার বিরোধিতা করেন। তিনি নাগরিকদের দুর্দশা এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘনের বিষয় জোরালোভাবে প্রচার করেন। ড. রোডের কাছে পাঠানো তার চিঠি বিশ্বে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশে ধ্বংসলীলার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি দরিদ্রদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।…ফাদারের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। বাংলাদেশ এমন বন্ধু আর পাবে কি?’
মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি মাদার তেরেসার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে যুদ্ধের সময় যেসব নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বা যুদ্ধের ফলে যেসব সন্তানের জন্ম হয়েছিল তাদের পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা জানান। বঙ্গবন্ধু মাদার তেরেসাকে এ ব্যাপারে কাজ করার অনুমতি দেন এবং তখন মাদার তেরেসার সিস্টাররা ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে জনসেবা শুরু করেন। ফাদার টিম এ কাজে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে তিনি ঢাকায় ফিরে তৃণমূলের সংগঠন কারিতাসের পরিকল্পনা অফিসার হিসেবে যোগ দেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেন।
নটরডেম কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ফাদার হেমন্ত রোজারিও ফাদার টিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।