নিজস্ব প্রতিবেদক: মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করতে এনসিটিবি নতুন করে একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করেছে। তার আলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট করতে দেয়া হবে। এটি মূল্যায়নের মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে।
বুধবার (২১ অক্টোবর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ তথ্য জানান।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুক চৌধুরী এবং শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রণয়ন করা সিলেবাস থেকে চারটি অ্যাসাইনমেন্ট এক মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এ সিলেবাসটি এনটিসিটির মাধ্যমে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো হবে। শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে তা পৌঁছে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বা খাতায় লিখে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, এর বাইরে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের বাসার কাজ দেয়া যাবে না। চার সপ্তাহে শুধু চারটি অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্থীরা পৌঁছে দেবে।
১ নভেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেয়ার কাজ শুরু হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবক সশরীরে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে দিতে পারবেন। কেউ চাইলে অনলাইনের মাধ্যমেও শিক্ষকদের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারবেন। যদি তা সম্ভব না হয় তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে একটি ই-মেইল ঠিকানা দেয়া থাকবে, সেখানে সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট পাঠাতে পারবেন। সব অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার পর ধারাবাহিকভাবে শিক্ষকরা মূল্যায়ন করবেন।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর তার ক্লাস থেকে পরবর্তী ক্লাসে যেতে যতটুকু শিখনজ্ঞান প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করে ৩০ দিনের এ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি মূল্যায়ন করে সবাইকে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে। যেসব শিক্ষার্থী ভার্চুয়াল বা টেলিভিশন ক্লাস থেকে একেবারে বঞ্চিত রয়েছে, তাদের এগিয়ে নেয়ার জন্য শিক্ষকদের মাধ্যমে ছোট ছোট দল করে সেই শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘এরপরও যদি কেউ বঞ্চিত থাকে, তার কারণ ও তাদের কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায় তা বিবেচনা করা হবে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে সবাইকে নতুন ক্লাসে উন্নীত করা হবে। তাদের মধ্যে কেউ পিছিয়ে থাকলে তাদের চিহ্নিত করে বাড়তি পরিচর্যা নেয়া হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য অনলাইন ও টেলিভিশনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, ইবতেদায়ি সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
টানা সাত মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অবশেষে করোনা পরিস্থিতিতে মাধ্যমিকে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না বলে ঘোষণা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এদিকে প্রাথমিকে সরাসরি অটো প্রমোশন দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।