গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে চম্পা খান নামে কথিত এক নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে অসহায় বৃদ্ধার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সাতাশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। টাকা খুইয়ে প্রতিকারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ওই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব নারী রিজিয়া বেগম।
কথিত সাংবাদিক চম্পা ওই গ্রামের লিপু খানের স্ত্রী। তিনি আরজেএফ নিউজের সাংবাদিক ও ‘কাশিয়ানী রিপোর্টার্স ফোরাম’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে বেড়ান।
রিজিয়া ও এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সাতাশিয়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা নারী রিজিয়া বেগম এলাকার কিছু লোকের দেনা পরিশোধের জন্য গত ২৭ জানুয়ারী রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউন্ডেশন (আরআরএফ) নামে একটি এনজিও থেকে ৩ লাখ টাকার ঋণ নেন। কথিত সাংবাদিক চম্পা খান ওই এনজিওর ক্ষুদ্রঋণ সমিতির সভানেত্রী হিসেবে লোনটি করিয়ে দেন। তিনি অশিক্ষিত রিজিয়াকে সঙ্গে নিয়ে এনজিওর নামীয় চেকটি ব্যাংকে জমা দিয়ে কৌশলে টাকাগুলো তুলে নিজের কাছে রাখেন। বাড়িতে গিয়ে টাকাগুলো রিজিয়ার হাতে বুঝে দিবেন। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে রিজিয়াকে টাকা না দিয়ে তার এক পাওনাদারকে ১ লাখ টাকা দেন চম্পা। কয়েকদিন পর চম্পা রিজিয়াকে ৩০ হাজার ও এনজিওর ২২ হাজার টাকা কিস্তি দেন। বাকি ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা রিজিয়া চাইলে নানা তালবাহানা করেন চম্পা। কিছুদিন পর রিজিয়ার টাকা গচ্ছিত রাখার কথা অস্বীকার করেন। গত ২৩ মার্চ অসহায় রিজিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান, সৈয়দ আলী মোল্যা, জালাল মোল্যা, ইউনুস মোল্যা, হানিফ মোল্যা, দুলু মোল্যা, মহিলা ইউপি সদস্য আমেনা বেগম, মোশারফ শেখ, পলাশ শরীফ, বাকা ফকিরসহ শতাধিক গণ্যমান্য লোকের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে চম্পা রিজিয়ার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে প্রমাণিত হওয়ায় চম্পা কৌশলে সালিশ বৈঠক অমান্য করে চলে যান। টাকা গচ্ছিত রেখে প্রতারণার শিকার হয়ে কেঁদে বেড়াচ্ছেন অসহায় ওই নারী।
কথিত সাংবাদিক চম্পা খানের প্রতারণার শিকার শুধু রিজিয়া না, এলাকার অনেকেই। চম্পার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গোটা গ্রামবাসী। মান-উজ্জতের ভয়ে এলাকার কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। এদিকে, সাংবাদিক পরিচয়ে চম্পার কর্মকান্ড প্রকৃত সাংবাদিকদের চরম সম্মানহানি হচ্ছে। কথিত এই সাংবাদিকের হাত থেকে বাঁচতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
সাতাশিয়া গ্রামের রাকিম মোল্যা বলেন, চম্পা খান সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে। এর আগেও লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অস্বীকার করেছেন। পরে সালিশীর মাধ্যমে আদায় করা হয়েছে। চম্পার ভয়ে আমরা এলাকাবাসী কিছু বলতে সাহস পাই না। থানা পুলিশের সাথে বলে তার গভীর সখ্যতা রয়েছে। কিছু বললে পুলিশের ভয় দেখায়। আমরা চম্পা হাত থেকে নিস্তার চাই।’
এ ব্যাপারে চম্পা খানের সাথে কথা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেন।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’