বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
সিলেট টেস্টে অনবদ্য ইনিংসে সুখবর পেলেন মুমিনুল ইসরাইল থেকে পুরস্কার পেয়ে ইউনেস্কোর বলে চালালেন ড. ইউনূস ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ কাল, যেভাবে জানবেন সাকিবের ফেরার টেস্টে নেই হাথুরুসিংহে ‘জনগণ থেকে যারা আউট হয়েছে, তারা ভারতবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে’ চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে যুবকদের ধরে এনে টর্চারসেলে নির্যাতন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা বয়েজ এন্ড গালর্স কলেজের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কালীগঞ্জে স্বাধীনতা দিবসে আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গাজীপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কালীগঞ্জে চোরাকৃত স্বর্ণ ও ট্রাক ভর্তি সোয়ামিলসহ গ্রেফতার- ৩

মুনিয়াকে হত্যার অভিযোগে শারুনের বিরুদ্ধে মামলা

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ মে, ২০২১
  • ১২৮ বার পঠিত

সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করেছেন মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান। রোববার (২ মে) এ মামলা দায়ের করেন তিনি। শারুন সরকার দলীয় হুইপ ও চট্টগ্রামের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে।

গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আদালত থেকে পাওয়া নথি অনুযায়ী, আশিকুর রহমান সবুজের মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা তিন ভাইবোনের মধ্যে মোসারাত জাহান মুনিয়া তৃতীয়। তার বয়স ২১ বছর। সে মাধ্যমিক শেষ করে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে পড়াশোনার জন্য যথাসাধ্য সহযোগিতা করে আসছিলাম। ইতিমধ্যে আসামি নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনের সঙ্গে আমার বোনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে মাঝেমধ্যে আসামি শারুনের সঙ্গে কথাবার্তা ও দেখা-সাক্ষাৎ হতো মুনিয়ার। আমার বোনকে হত্যার আগে তার কাছ থেকেই আমি এসব কথা জেনেছি ও শুনেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় গত দুই বছর আগে আমার বোন নুসরাত জাহান (তানিয়া) ও তার স্বামী মিজানুর রহমানের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে গুলশানে ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাড়িতে ফ্ল্যাট ভাড়া করে। সেখানে আমার ছোট বোন নুসরাত আমার অপর ছোট বোন মুনিয়াকে ওই বাসায় অবস্থানের নির্দেশ দেয়। সেই মোতাবেক মুনিয়া সেখানে অবস্থান শুরু করে।’

আর্জিতে তুলে ধরা তথ্যমতে, ‘ঘটনার দিন ও সময়ে আমার মেজো ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান তার মোবাইল ফোন থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে আমাকে কল করে জানায়, মুনিয়া ঢাকায় আত্মহত্যা করিয়াছে। তাদের কাছ থেকে ঘটনা শুনিয়া আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি এবং বারবার মূর্ছায় যেতে থাকি। পরের দিন গত ২৭ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টায় আমার মেজো বোন নুসরাত জাহান তানিয়া এবং ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান মৃতা মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ নিয়ে কুমিল্লা আসে। তারপর আমরা দাফন-কাফনের কাজ শেষ করিয়া আমি ঢাকায় ফিরে আসি। তখন শুনতে পারি, আমার বোন (নুসরাত) প্রকৃত ঘটনা না জেনে শুধু সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করে গুলশান থানায় দ-বিধি ৩০৬ ধারায় (আত্মহত্যার প্ররোচনা) মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে আমাদের কারো সাথে কোনো আলোচনা করে নাই। আমি ঢাকায় আসিয়া ঘটনাস্থলে যাইয়া বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে শুনি এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সংবাদ/নিউজের মাধ্যমে এবং আমার মৃতা বোনের মোবাইল ডিভাইস থেকে সংগৃহীত কথোপকথনের স্ক্রিনশট দেখি এবং পড়ি। পরবর্তীতে আমার মেজো বোন নুসরাত জাহান তানিয়ার কাছ থেকে শুনে এবং উপস্থিত লোকজনের কাছ থেকে প্রকৃত বিষয়টি জেনে বিশেষ করে এজাহারের ভাষ্য অনুযায়ী, “পুলিশসহ ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলানো পা বিছানার সঙ্গে লাগানো এবং সামান্য বাঁকানো দুই পা ছিল।” ইহাতে যেকোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব যে, পা যদি খাটের ওপর লাগানো থাকে সেটা কোনো অবস্থায় তা আত্মহত্যা নয়, ইহা একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, আমার বোনকে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে এই আত্মহত্যার মিথ্যা নাটক উপস্থাপন করা হয়েছে।’

আশিকুর তার এজাহারে আরও লেখেন, ‘আসামি নাজমুল করিম শারুন আমার কোমলমতি বোনকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার ও ভোগ করেছে। আমার অধুনা মৃতা বোন মুনিয়া যখনই এই ঘৃণ্য চক্রান্ত থেকে বের হয়ে ফেরত আসতে চেয়েছে তখনই শারুন আমার বোন মুনিয়ার ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাক্ষী, আমার বোন তানিয়ার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিয়াছে যে, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন সুকৌশলে আমার বোনের ফ্ল্যাটে ঢুকে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় নির্মমভাবে হত্যা করে মুনিয়ার মৃতদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে এবং কৌশলে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত ফ্ল্যাটের ডুপ্লিকেট চাবি শারুনের নিকটও থাকত এবং মূল দরজার তালা উভয় দিক থেকে লাগানো যায়। যেহেতু আসামি উল্লিখিত ঘটনা ঘটাইয়া (ফৌজদারি দণ্ডবিধির) ৩০২/৩৪ ধারায় অপরাধ করিয়াছে, তদবিষয়ে সুবিচার এবং বিজ্ঞ আদালতের ন্যায়ানুগ আদেশ প্রার্থনা করে।’

গত ২৬ এপ্রিল মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুনিয়া ও শারুনের কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এছাড়া গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার বাদী নুসরাত জাহানও স্বীকার করেছেন, মুনিয়ার সঙ্গে আনভীরের একটি ছবি দিয়ে শারুন তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। তাছাড়া শারুনের সঙ্গে মুনিয়ার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও স্বীকার করেছেন নুসরাত।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com