বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক গুলিবিদ্ধ কুমিল্লা সদর দক্ষিণে জনপ্রিয়তা অপ্রতিদ্বন্দ্বি আবদুল হাই বাবলু তীব্র তাপপ্রবাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ সবুজবাগ থানার পক্ষ থেকে খাবার পানিও স্যালাইন বিতরন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল পিরোজপুরে তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জিয়াউল গাজী সহ ১০ প্রার্থীর মনোয়নপত্র দাখিল উত্তরায় ট্রাফিক পুলিশের মাঝে ওরস্যালাইন বিতরণ। পাঁচশত টাকায় স্ত্রীকে বন্ধ, গনধর্ষনের স্বীকার স্ত্রী,স্বামী সহ আটক-৪ বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার বিধিনিষেধ তুলে দিলো কুয়েত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজলের জয়জয়কার

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা মাহতাব: ফুঁ দিলেই শরীরে বসে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৯ জুন, ২০২১
  • ১৫৯ বার পঠিত

যশোরের কেশোবপুরের বংশীবাদক মাহতাব মোড়ল। বাঁশির সুরে উড়ে এসে তার শরীরে বসে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি। এ যেন রূপকথার সেই হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার বাস্তব রূপ।

মাহাতাব মোড়ল কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মোমিনপুরের কালাচাঁদ মোড়লের ছেলে। কেশবপুরের মোমিনপুরে তার নানাবাড়ি। বর্তমানে এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা মাহতাব। সবাই তাকে চেনে মৌমাছি মাহতাব নামে। তিনি বাঁশিতে ফুঁ দিলেই ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে জড়ো হয় তার শরীরে। মৌমাছির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ অভ্যাস গড়ে তুলেছেন তিনি। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই উৎসুক মানুষ ভিড় করে মাহতাবের বাড়িতে।

জানা গেছে, ১২ বছর বয়স থেকেই মৌচাক থেকে মধু আহরণ করতে শুরু করেন মাহতাব। ওই সময় বালতিতে শব্দ করে চাক থেকে মৌমাছি দূরে সরিয়ে দেয়ার কৌশল রপ্ত করেন তিনি। এরপর টিনের থালায় শব্দ শুনে মৌমাছি চাক ছেড়ে তাঁর কাছে আসতে শুরু করে। এমন দৃশ্য থেকে মৌমাছির প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়।

ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে মধু আহরণের পর এর উচ্ছিষ্ট কাপড়ে লাগিয়ে বাড়ির চারপাশে ঝুলিয়ে রাখেন মাহতাব। ওই কাপড়ে মৌমাছি বসে খাবার গ্রহণ করে, বাড়ির আশপাশে উড়ে বেড়ায়। এক পর্যায়ে টিনের থালা বাদ দিয়ে বাঁশিতে সুর তুলে মৌমাছিকে কাছে আনতে থাকেন মাহতাব। ওই সুর শুনে এখন হাজারো মৌমাছি তার শরীরে জড়ো হয়।

মাহতাব মোড়ল জানান, ২০ বছর ধরে মধু সংগ্রহ করছেন তিনি। বাবার বাড়ি ছিল খুলনার সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রা উপজেলায়। সুন্দরবনসহ সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর অঞ্চলে তিনি মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। মধুর চাক ভাঙতে ভাঙতে মৌমাছির প্রতি তার ভালোবাসা তৈরি হয়। প্রথমে বালতি, টিনের থালার মাধ্যমে একটি-দুটি মৌমাছি শরীরে বসতে থাকে তার। আর এখন বাঁশির সুরে হাজারো মৌমাছি এসে বসে। মৌমাছি বসতে বসতে শরীর তার মৌচাকের আকার ধারণ করেছে।

মৌমাছি শরীরে কামড় দেয় কি-না জানতে চাইলে মাহতাব বলেন, এর জন্য শরীরকে আগে থেকেই প্রস্তুত করতে হয়। তাদের আঘাত না করলে একটি মৌমাছিও শরীরে হুল বসায় না। কতদিনে বাঁশির এ কৌশল রপ্ত করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মৌসুমেই বাঁশির সুর রপ্ত করেছি।

মাহতাবের শরীরে মৌমাছি বসে- এ দৃশ্য দেখতে এসেছেন সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের কাস্তা গ্রামের আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, বাঁশির সুর শুনে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি মাহতাবের শরীরে বসে চাকের আকার ধারণ করে। বাঁশি বাজানো বন্ধ করার পর মৌমাছি উড়ে পার্শ্ববর্তী বাগানে চলে যায়। অবাক করার মতো ঘটনা। এই প্রথম দৃশ্য দেখলাম।

মাহতাব গর্ব করে বলেন, বাড়িতে বাঁশি বাজিয়ে পাঁচ মিনিটেই শরীরে হাজারো মৌমাছি জড়ো করতে পারি। কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় এখন আর ভয় লাগে না। মধু আহরণ করেই আমার চার সদস্যের সংসার চলে।

কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক জুলমত আলী বলেন, দীর্ঘদিন মাহাতাব মোড়ল মধু ভেঙে বেড়ায়। বাঁশির সুরে মৌমাছি শরীরের আনার কৌশল আয়ত্ব করায় এলাকায় তার পরিচিতি পেয়েছে মৌমাছি মাহতাব নামে। বিভিন্ন স্থান থেকে তার বাড়িতে মানুষ ওই দৃশ্য দেখতে আসে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com