নিউজ ডেস্ক : শরীর সুস্থ রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি। সূর্য রশ্মি এই ভিটামিনের প্রধান এবং উল্লেখযোগ্য উৎস। সূর্য রশ্মির সংস্পর্শে এলে শরীর নিজেই ভিটামিন ডি তৈরি করতে শুরু করে। আমাদের শারীরিক মানসিক সুস্থতার জন্য এই ভিটামিন অনেক জরুরি।
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি তৈরি হলে তা নানান গভীর রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, হৃদরোগের সম্ভাবনা কম করে ভিটামিন ডি। এছাড়াও আরো একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, এই ভিটামিনের প্রভাবে নানান ফ্লুয়ের সম্ভাবনাও দূর করা যায়।
সমীক্ষা অনুযায়ী এই ভিটামিন আমাদের মেজাজকে প্রভাবিত করে। গবেষকদের দাবি, ডিপ্রেশনের শিকার ব্যক্তিদের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট দেয়ায় তাদের মধ্যে উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। ভিটামিন ডি এর অভাব থাকলে, সেই ব্যক্তির মধ্যে অবসাদ, আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ার সমস্যা অধিক দেখা যায়। ওজন কম করতে চাইলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী যারা নিয়মিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ওষুধ খান, তাদের পক্ষে ওজন কম করা সহজ হয়। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর নানান উপকারিতা রয়েছে। ভিটামিন ডি বলতে সাধারণত যে ভিটামিন আমরা খেয়ে থাকি বা সূর্য রশ্মি থেকে লাভ করি তা হল ভিটামিন ডি৩। ভিটামিন ডি২ শরীর শোষণ করতে পারে না। তবে ডি৩ আমাদের শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
এই ভিটামিনের একাধিক উপকারিতা রয়েছে। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধের কাজে উন্নতি ঘটিয়ে সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। কিছু সমীক্ষা অনুযায়ী ভিটামিন ডি শরীরে ইনসুলিনের স্তরকে সাধারণের তুলনায় বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। বিশেষজ্ঞদের মতে ভিটামিন ডি৩ টাইপ-২ ডাইয়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি-তে উপস্থিত ক্যান্সার বিরোধী গুণ টিউমার কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। আবার কিছু সমীক্ষা অনুযায়ী ভিটামিন ডি ক্যান্সারের গতিকে কমিয়ে দেয়।
এই ভিটামিন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সূর্য রশ্মির মধ্যে। তাই প্রতিদিন সকালে সূর্য রশ্মির সংস্পর্শে আসুন। সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সকাল ৯টার মধ্যে রোদের সংস্পর্শে থাকলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই বেশি বেলা হলে রোদে না বের হওয়া ভালো।
এছাড়াও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন। তবে কিছু কিছু খাবার আছে, যা আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় ভিটামিন ও মিনারেল বের হয়ে গেলে ফোর্টিফায়েড ফুড সেই অভাব দূর করে। এটি খাদ্যবস্তুর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ফোর্টিফায়েড খাবার হল পাউরুটি, সিরিয়াল, দুধ, পনির, সোয়া মিল্ক ও কমলালেবুর জুস।
এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। সাদা বাটন মাশরুম, ওয়াইল্ড এডিবল ও চ্যান্ট্রেল মাশরুম ভিটামিন ডি-য়ে সমৃদ্ধ। মাশরুম ও কড লিভার তেলে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি থাকে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে। তাই প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত।
এছাড়াও চিজ, দই খেলেও উপকার পাওয়া যায়। ডিম এবং মাংস ভিটামিন ডি এর উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে প্রোটিনও পাওয়া যায়। খাবারের মধ্যে মাছকে ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে ভালো উৎস মনে করা হয়। এক্ষেত্রে সালমন মাছকে ভিটামিন ডি এর উল্লেখযোগ্য উৎস হিসেবে গণ্য করা হয়।