নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআইয়ের স্ত্রী সুমী খাতুনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা সদর আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার রাতে নাটোর সদর উপজেলার পাইকোরদল গ্রামবাসী সুমী খাতুন ও তার মাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে রাতেই ওই ভুক্তভোগী গৃহকর্মীর মা বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় মামলা করেন।
সুমী খাতুন সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাবনি গ্রামের আসাদুলের মেয়ে। তার স্বামী ঢাকায় কর্মরত গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খন্দকার আতিকুর রহমান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জামাল ও নাটোর জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসআই জামাল বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের কিছু আগে ওই আসামিকে কোর্টে পাঠানো হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
নির্যাতনের শিকার কিশোরীর চাচাতো ভাই জানান, তিন বছর আগে সদর হাসপাতালের সামনে আসামির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে আসামির বাসায় মাসিক ১২শ’ টাকা মজুরিতে চাচাতো বোনকে গৃহকর্মীর কাজে দেন। গৃহকর্মীর মজুরি বাবদ এক হাজার টাকা করে আট মাস দেওয়া হলেও আর কোনও টাকা পায়নি কিশোরীর পরিবার। বার বার বলার পরেও ওই কিশোরীকে বাড়ি আসতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তার দাদা মারা গেলেও তাকে আসতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে তার মা বার বার ফোন করলে বুধবার রাতে তাকে বাড়ি নিয়ে আসে আসামি ও তার মা।
কিশোরীর ভাবি বলেন, আমার ননদ বাড়ি পৌঁছার পর তাকে স্বজনদের কাছে আসতে বাধা দিচ্ছিলো আসামি। এ সময় সন্দেহ হলে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখি তার মুখ ও হাতে আঘাতের দাগ। ১০ মিনিট যেতে না যেতেই আসামি তাকে নিয়ে চলে যেতে চান। এ সময় ননদের সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, করোনাকালে তারা আসামির বাবার বাড়ি ভাবনি গ্রামে অবস্থান করছে। সেখানে বিভিন্ন অজুহাতে তার ওপর নির্যাতন করে আসামি সুমী।
ভুক্তভোগী গৃহকর্মীর অভিযোগ, আসামি তাকে দিয়ে গরু-ছাগলের ঘাস কেটে নেওয়াসহ নানা কাজ করাতো। সামান্য দোষেই তাকে হাতা ও লোহার প্লাস দিয়ে আঘাত করা হতো। গরম ইস্ত্রি চেপে ধরেও নির্যাতন করতো সুমী।