রাজধানীর উত্তরায় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্যকার ও গবেষক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১ জুলাই) দুপুরে উত্তরা ৫নং সেক্টরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময়ে তার স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফাহমিদা হককেও গালমন্দ করা হয়।
একদল মুসল্লি হামলা চালিয়ে তাদের বাসার সামনের অংশে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ করেছেন এ দম্পতি।
এদিকে পুলিশের দাবি, হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম গণমাধ্যমকে জানান, জুমার নামাজের সময় তারা গাড়ি নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। বাসার প্রধান ফটকে একটি মোটরসাইকেল রাখা দেখে তাদের গাড়িচালক হর্ন বাজান। তখন সামনের মসজিদ থেকে এসে এক মুসল্লি এ নিয়ে কথা বলেন। এর জের ধরেই বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়।
তিনি এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
রতন সিদ্দিকী বলেন, উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় তারা থাকেন। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে গাড়ি নিয়ে বাসায় ফেরার সময় প্রধান ফটকে মোটরসাইকেল থাকায় গাড়ি ঢোকানো যাচ্ছিল না। সেটি সরানোর জন্য হর্ন বাজিয়ে সংশ্নিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালান গাড়িচালক। এরপরই বাসার বিপরীত দিকের মসজিদ থেকে প্রথমে একজন এবং পরে কয়েকজন মুসল্লি এসে বাগ্বিতণ্ডা শুরু করেন।
রতন সিদ্দিকী জানান, একপর্যায়ে তিনি ও তার স্ত্রীকে গালাগাল করতে শুরু করেন তারা। তার ওপর হাত তোলা এবং বাসায় ভাঙচুর হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তার মেয়ে পূর্ণাভা সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, বাসার ফটকের সামনে সবজির ভ্যান ও মোটরসাইকেল রেখে সড়ক আটকে রাখা ছিল। সেই সঙ্গে মুসল্লিদের অবস্থানের কারণে পুরো সড়ক প্রায় বন্ধ ছিল। তখন গাড়িচালক হর্ন দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তার বাবা গাড়ি থেকে নেমে কথা বলতে গেলে তাকে ধাক্কা দেওয়া হয় এবং পেটে আঘাত করা হয়। তার মায়ের কপালে টিপ দেখে তারা সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলে। অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে সাড়া পাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
পরে পরিচিত পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তাদের ফোন করেন তিনি। পুলিশ আসার পর হামলাকারীরা বলেন, সামান্য ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে।
অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালে নাটকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।